প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে জনগনের উন্নয়ন করতে আর বিএনপি আসে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে।’ ২১ মার্চ বুধবার বিকেলে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আয়োজিত ১৪ দলের জনসভায় দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জনগনের দুঃখ কষ্টের কথা বলতে বিএনপি সংসদে আসেনি, তারা এসেছে বেতন ভাতা রক্ষা করতে। যে জনগনের পয়সায় এই বেতন ভাতা হয় তাদের জন্য বিএনপি’র কোন দরদ নেই। তারা দামি গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়, আরাম আয়েশ করে। আসলে ক্ষমতায় না থাকায় তারা এখন দুর্নীতি করতে পারছেনা, লুটপাট করতে পরছেনা। এটাই তাদের অন্তর্জ্বালা, এটাই তাদের কষ্টের কারণ। কিন্তু আর কাউকে লুটপাট করতে দেয় হবে না। বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। ইনশাল্লাহ আমরা বাংলাদেশকে উন্নত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবো।’তিনি বলেন, ‘আজ ৩ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। বর্তমানে মানুষ শান্তিতে চলাচল করতে পারছে। মানুষের আর্থিক সক্ষমতা প্রতিষ্ঠা ও শান্তির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা উন্নয়ন পান আর বিএনপি-জামাতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনলে পান হত্যা-খুন-জখম আর বেপরোয়া দুর্নীতি-লুটপাট। তিনি আরো বলেন, ‘বিগত শাসনামলে আমরা জনগনের হাতে হাতে মোবাইল দিয়েছি। এর আগে বিএনপির সময়ে মোবাইলের দাম ছিলো সোয়া লাখ টাকা। এবার ক্ষমতায় এসে আমরা ১০ হাজার টাকায় ল্যাপটপ দিচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হচ্ছে কম্পিউটার ল্যাব। প্রতিটি গ্রামে ইউনিয়নে কম্পিউটার ইন্টারনেটের ব্যবহার এবং ল্যাপটপের মাধ্যমে আপনারা এখন দেশে বিদেশে যে কারো সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগাযোগ এবং দেখা সাক্ষাত করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া তার দু’সন্তানকে মানুষ করতে পারেননি, তাই জোট সরকারের আমলে দেশে সাক্ষরতার হার হ্রাস পেয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর এ হার বৃদ্ধি করা হয়। আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে শেখা যায় মানি লন্ডারিং, বিদেশে অর্থ পাচার আর ট্রাক ভর্তি অস্ত্রের ব্যবসা। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাবেক চীফ হুইফ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল এসে ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দ্বিতল আধুনিক নৌ-বন্দর, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক উদ্ধোধন করেন এবং মেরিন একাডেমি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মানকাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। দুপুরে তিনি সার্কেট হাউজে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এবং বরিশাল জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বরিশালের সার্বিক উন্নয়নকল্পে মতবিনিময় সভা করেন।
Discussion about this post