ইসলাম ধর্ম প্রচার ও প্রসারের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মুসলিম মনীষীগণের আগমনের মাধ্যমে ভারত বর্ষে তথা বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের বিস্তার ঘটে। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত শাহ জালাল (র.) এবং তাঁর কয়েকজন আত্মীয় ও ভক্তবৃন্দ দ্বীন প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বীন প্রচারের কেন্দ্র হিসেবে বিজ্ঞ আলেম ও পীর-মাশায়েখগণ দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। কেউ কেউ নিজ ব্যবস্থাপনায় স্বীয় অনুসারী ও জ্ঞান পিপাসুদের জন্য খানকার মাধ্যমে ধর্মীয় অনুশাসন শিক্ষা দিয়েছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর সাহেবের সিলসিলা এ ধারার অন্যতম।ঐতিহ্যবাহী আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আল-কাদেরী (র.) কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান লাভ করে শরীয়তের হুকুম-আহকাম পালন করে স্বীয় অনুসারী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সঠিক পথে পরিচালিত করেন। তাঁর সন্তানাদিদের দ্বীনী শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেন। তাঁরই সুযোগ্য সন্তান আল্লামা হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী (র.) তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সুদূর ভারতের সুপ্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করে কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান আহরণ করে এ দরবার শরীফের দায়িত্ব পালন করেন।আল্লামা হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী (র.) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার আড়াইবাড়ী গ্রামের পীর পরিবারে ১৯৩১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আল-কাদেরী (র.) ও মাতা মরহুমা সালেহা খাতুন। তাঁর নানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রামের হযরত মাওলানা মুকসুদ আলী (র.) দেশ বরেণ্য আলেম ছিলেন। তাঁর বাল্য নাম ছিল মুহাম্মদ আবদুল্লাহ।মাতৃস্নেহ থেকে নিজ গ্রাম আড়াইবাড়ীতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। কোরআন-সুন্নাহর যথোপযুক্ত জ্ঞান লাভের অদম্য স্পৃহায় তিনি সুদূর ভারতের রামপুর মাদরাসায় ভর্তি হলেন। অতি কষ্ট স্বীকার করে তিনি কয়েক বছরে মাধ্যমিক শিক্ষা সাফল্যের সহিত সমাপ্ত করেন। দেশে এসে সিলেট জেলার গাছবাড়ী আলিয়া মাদরাসা থেকে ১৯৫২ সালে আলিম পরীক্ষা, সরকারি আলিয়া মাদরাসা, ঢাকা থেকে ১৯৫৪ সালে ফাযিল ও ১৯৫৬ সালে কামিল (ফিকহ গ্রুপে) প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি তিনি নোবেল বই ও সমকালীন বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগতির জন্য দেশি-বিদেশি পত্র-পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন। তিনি উর্দু, ফার্সী ও আরবী ভাষায় পা-িত্য অর্জন করেন।শিক্ষা লাভের নির্দিষ্ট কোন সীমারেখা নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বিভিন্নভাবে শিক্ষা লাভ করতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের জন্য পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষা লাভ কিংবা শিক্ষাদান পদ্ধতিতে যত সহজে আয়ত্ব করা যায় সেটিকে অনুকরণ করা হয়। আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে শিক্ষাদানের বিভিন্ন পদ্ধতির প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যেমন সাধারণ শিক্ষা, ইসলামী শিক্ষা, সাধারণ ও নৈতিক শিক্ষাসহ আরো হরেক রকমের। কোনোটি সম্পূর্ণ সরকারি খরচ ও বেতন ভাতার মাধ্যমে, কোনোটি সরকার ও ব্যক্তি কিংবা জনগণ আবার কোনোটি পুরোপুরি জনগণের অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে আসছে। দ্বীনী ও নৈতিক শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপমহাদেশের বিখ্যাত আলেমে দ্বীন, পীরে কামেল আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আছগর আহমাদ আল-কাদেরী (র.) ১৯৩৭ সালে বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার পৌর সদরের আড়াইবাড়ী আলিয়া মাদরাসা ও একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকালে ইহা দরসে নিজামী হিসেবে পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে তাঁর সাহেবজাদা বহুগ্রন্থ প্রণেতা আল্লামা হযরত মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী পীরে সাহেব (র.) এর হাল ধরেন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৯৫৭ সালে দাখিল, ১৯৬৯ সালে আলিম, ১৯৭৭ সালে ফাযিল স্বীকৃতি ও আল্লামা হযরত মাওলানা মরহুম আবু সাঈদ আছগর আহমাদ পীর সাহেব (র.) -এর দৌহিত্র আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের বর্তমান পীর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী ২০০৪ সালে কামিল মানে উন্নীত করেন। পাশাপাশি গড়ে তোলেন আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া ছায়েদীয়া এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, আড়াইবাড়ী হাক্কানীয়া হাফেজী মাদরাসা, আড়াইবাড়ী সাইয়েদা সুরাইয়া নূরানী মাদরাসা, ইসলামী বুক ক্লাব। বর্তমানে ইবতেদায়ী, জুনিয়র, দাখিল, আলিম ও ফাযিল কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।জেলা সদর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উপজেলার সংযোগ পথের গাঁ ঘেঁষে পশ্চিম পাশের্^ মাদরাসা একাডেমিক ভবনসমূহ। উত্তর ভিটিতে রয়েছে দু’তল ও তিনতলা ভবন আর দক্ষিণ ভিটিতে রয়েছে একতল ও দুতল ভবনসমূহ। ইউ প্যাটার্নে ভবনসমূহ নির্মিত। মাঠের পশ্চিম পাশের্^র ঐতিহাসিক তিন গম্বুজবিশিষ্ট সুদর্শন প্রাচীন মসজিদটি মরহুম আল্লামা মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী (র.) সাহেবের চাচাতো ভাই মরহুম আবদুর রহিম (অব.) ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের ছেলে বিশিষ্ট শিল্পপতি একেএম বদিউল আলম সাহেবের আর্থিক সহায়তায় পূণর্নির্মাণের কাজ চলছে। মাদরাসার ভবন সংস্কার ও হাফেজী মাদরাসার ভবন নির্মাণ এবং পরিচালনায় বদিউল আলম সাহেবের আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ডিসি রোডের পূর্ব পাশের্^ রয়েছে দ্বিতল ভবন ও মাদরাসার বিশাল মাঠ।আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মাদরাসাটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তার, অনৈসলামিক কার্যকলাপ রোধসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকা- করে থাকে। ২০০৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব অর্জন করে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজ উদ্দিন আহমেদ কর্তৃক ক্রেস্ট ও সনদপত্র লাভ করে। ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার এবং বিজ্ঞান শিক্ষা এগিয়ে চলছে। পৌর সদরের এ মাদরাসায় প্রায় সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতি বছর ভালো ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।মাদরাসায় রয়েছে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার। এতে অনেক দূর্লভ কিতাবাদি আছে যা মরহুম পীর আল্লামা আছগর আহমাদ (র.) ও আল্লামা মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী (র.) সংগ্রহ করেছিলেন। দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ষান্মাসিক, বার্ষিক পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী এবং বিভিন্ন জার্নাল পাঠ করে পাঠক-লেখক তাদের চাহিদা পূরণ করে থাকে। প্রযুক্তি প্রেমীদের জন্য রয়েছে আধুনিক সুসজ্জিত অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন একটি কম্পিউটার ল্যাব। এতে সুশৃঙ্খলভাবে শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক ক্লাশে অংশ গ্রহণ করে থাকে। শিশু শ্রেণির ক্ষুদে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কামিল (মাস্টার্স) পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীরা পর্যায়ক্রমে ল্যাবরেটরি ব্যবহার করে বিশ^ায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শরীক হয়ে দেশ-বিদেশে অনলাইন জব করতে সক্ষম হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে দুনিয়ার সকল সুবিধা ভোগ করতেও পিছিয়ে নেই। বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ বিদ্যমান রয়েছে। এতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও আবিষ্কারের কাজ অনুশীলন করছে।ছাত্রাবাসে রয়েছে পিতৃ-মাতৃহীন ও অসহায় শতাধিক ছাত্র। এরা মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীদের আদর সোহাগে হেসে খেলে শিক্ষা গ্রহণ করছে। নূরানী মাদরাসায় ছন্দের তালে তালে মাসয়ালা মাসায়েল, কোরআনের সূরা-কিরাত, হাদীস-কালাম, ছড়া-কবিতা, নামতা-শতকিয়া মুখস্থ করছে। হাফেজী মাদরাসায় বিশুদ্ধভাবে কোরআন তিলাওয়াত ও মুখস্থ করছে এক ঝাঁক ক্ষুদে শিক্ষার্থী। প্রতি বছর হিফজ শেষ করে সমাপনী সনদ ও পাগড়ী নিয়ে গৌরবান্বিত হচ্ছে অনেকেই।শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত কম্পিউটার ও বিজ্ঞান মেলায় অংশ গ্রহণ, সাহিত্য সাময়িকী ও দেয়ালিকা প্রকাশ, ডিবেডিং ক্লাশ, লাইব্রেরী ওয়ার্ক, পত্র-পত্রিকা পাঠ, ইসলামি সাহিত্য ও গল্প-কবিতার পুস্তক অধ্যয়ন, কুইজ প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্য সচেতন হিসেবে খেলাধুলার আয়োজন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ, স্কাউটিংসহ যাবতীয় সহপাঠক্রমিক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করে থাকে। মাদরাসার বর্তমান অধ্যক্ষবিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিফলিত হয়ে থাকে।তিনি পিতার প্রতিষ্ঠিত আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের গদ্দিনশীন পীর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে তাঁর সুবিখ্যাত পাঠাগারটি সংরক্ষণ করেন। অতি মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিতাব এ লাইব্রেরীতে রয়েছে। জ্ঞান পিপাসু উলামায়ে কিরাম অনেক জটিল মাসয়ালা মাসায়েল আল্লামা হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী (র.)-এর নিকট এসে সমাধান করতে সক্ষম হতেন। প্রত্যহ শতশত ধর্মপ্রাণ জনতা পীর সাহেব (র.)-এর সান্নিধ্যে এসে নিজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান লাভ করতেন। তিনি কখনো শরীয়তের খেলাফ কোন কাজে সহায়তা করতেন না।তিনি দেশের গরীব, অসহায়দের শিক্ষা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতায় লিল্লাহ বোর্ডিং, ইয়াতিমখানা, নূরানী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। কোন কোন পরিবারে বঞ্চিত বয়স্ক অসহায় লোকদেরকে লিল্লাহ বোর্ডিং-এ খাবারের ব্যবস্থা করে তাদের অসহায়ত্ব দূর করার ব্যবস্থা করতেন। মাদরাসা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিশাল অট্টালিকা নির্মাণের দেশি-বিদেশি অনুদান মঞ্জুর করেন। ঐতিহাসিক আড়াইবাড়ী জামে মসজিদের মুতাওয়াল্লী ও খতীব হিসেবে সমকালীন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নিয়মিত খুৎবা দিতেন। হাউজি, যাত্রা, মদ, জুয়া, সার্কাস এবং অশ্লীল ও অনৈসলামিক কাজের প্রতিবাদ করতে কুণ্টাবোধ করতেন না।দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আগত গরীব-অসহায় ব্যক্তিদের বিভিন্ন জটিল রোগজনিত সমস্যা হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে সেবাদান করতেন। মূল্যবান দ্রব্যাদি কিংবা কোন প্রাণী হারানো গেলে পীর সাহেব (র.)-এর দ্বারস্থ হলে তিনি তদ্বীর করলে অনেক ক্ষেত্রে উপকার পাওয়ার নজির রয়েছে। এলাকায় খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে ফসল বিনষ্ট হলে তিনি যথানিয়মে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন। এসকল জনহিতকর কাজে নিজেকে সদা নিয়োজিত রাখতেন। মনের মাকসুদ পূরণের লক্ষ্যে আগত জনতা শরীয়ত পরিপন্থী কোন কাজে লিপ্ত হতে পারতেন না।মরহুম আল্লামা গোলাম হাক্কানী (র.)-এর বড় ভাই হযরত মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ গোলাম জিলানী (র.), হযরত গোলাম রব্বানী (র.), ছোট ভাই হযরত মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম ছামদানী (র.) দ্বীন কায়েমের জন্য দেশ-বিদেশে কাজ করে গেছেন। তাঁর সহোদর বোন ফিরোজা খাতুন স্বামী কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার বানিয়াপাড়া দরবার শরীফের পীর হযরত মাওলানা আবদুর রউফ সাহেব (র.), ফজিলাতুন নেছা স্বামী ফেনী জেলার দুধমুখা দরবার শরীফের পীর আলহাজ¦ হযরত মাওলানা আবদুল হক (র.), রোকেয়া খাতুন স্বামী কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার লৎস্বর মিয়া বাড়ির হযরত মাওলানা আবদুল্লাহ (র.), হালিমাতুস সাদীয়া স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার তালতলা গ্রামের বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক বহু গ্রন্থ প্রণেতা অধ্যাপক হাসান আলী আল আলভী (র.)। তাঁর শ^শুর হযরত মাওলানা ইব্রাহিম বারাহীপুর, ফেনী ও সৈয়দ আবুল হোসেন, লক্ষীবাজার, ঢাকা। তার স্ত্রী মরহুমা রাকিবা খাতুন ও সৈয়দা সুরাইয়া বেগম।পিতা হিসেবে মরহুম আল্লামা গোলাম হাক্কানী (র.)- পাঁচ ছেলে ও চার কন্যাকে ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষায় এগিয়ে নিতে সামর্থ্য হন। বড় ছেলে হযরত মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া সাঈদী স্বপরিবারে আমেরিকায় বসবাস করছেন। দ্বিতীয় ছেলে মোহাম্মদ গোলাম কবীর সাঈদী একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তৃতীয় ছেলে আল্লামা হযরত মাওলানা মো. গোলাম সারোয়ার সাঈদী পিতার প্রদত্ত আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের বর্তমান গদ্দিনশীন পীর হিসেবে দরবার শরীফ পরিচালনা করছেন এবং আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়ে দ্বীনী কাজ আঞ্জাম দিচ্ছেন। চতুর্থ ছেলে মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম খাবীর সাঈদী ঢাকার একটি বেসরকারি ফার্মে চাকরি করছেন। পঞ্চম মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম হাদী সাঈদী ইংল্যান্ডের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শেষে সদ্য দেশে ফিরেছেন। চার কন্যা রুম্মানা সাঈদীয়া স্বামী ফেনী জেলার দুধমুখা দরবার শরীফের পীর হযরত মাওলানা লোকমান হোসাইন, বিলকিস সাঈদীয়া স্বামী বাংলাদেশ বিমানের পদস্থ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াস ভূইয়া, তামান্না সাঈদীয়া স্বামী দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আবদুল কাদির ও তাবাসসুম সাঈদীয়া স্বামী মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়েদ উসামা আল মুসাদ্দেক জাফরী। পীরে কামেল আল্লামা হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী (র.) বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। দ্বীন প্রচারের অন্যতম বলিষ্ঠ মাধ্যম সাহিত্যের চর্চা ও জ্ঞান গর্ব বই-পুস্তক লিখাতেও তিনি সিদ্ধহস্ত একজন আলেম।-শেখ কামাল উদ্দীন (জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত
Discussion about this post