কুয়েতে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বাংলায়, নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের পরিচিতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি কালচার, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা থেকে দুরে সরে যাচ্ছে । এখানে বাংলা স্কুল সহ আরো বেশি সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রয়োজন বলে মনে করে প্রবাসীরা। বাঙ্গালী যেখানে বাংলাভাষা সেখানে। বিদেশের বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষাভাষীদের সংখ্যা বাড়ছে। যারা নতুন প্রজন্ম, তারা অন্যান্য ভাষায় দক্ষ হলেও নিজ মাতৃভাষা বাংলার প্রতি তাদের আগ্রহের ঘাটতি দেখা যায়। তারাও জানতে চায় বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতির কথা। তারা জানতে চায় বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা। আমাদের মহান একুশে, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ছাড়াও বৈশাখ বরণ, রবীন্দ্র-নজরুল-জীবনানন্দ জয়ন্তী, বসন্ত উৎসব, বইমেলার কথা।
বিশ্বায়নের যুগে বাংলা এখন বৈশ্বিক ভাষা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের প্রবাসজীবনে বাংলাভাষার চর্চায় অবিরাম কাজ করছেন অসংখ্য বাংলাভাষী। বিভিন্ন দেশে দূতাবাসের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক প্রবাসীকে ভাষা-সংস্কৃতির প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত রাখা প্রায়-অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন বাংলাদেশের নানা জাতীয় দিবস উদযাপন, ঋতু বা পার্বণ উদযাপন ইত্যাদি দেশজ সংস্কৃতির অনুষ্ঠান প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলাভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারে সাংগঠনিক ভূমিকা গুরুত্ব বহন করে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাংলাদেশের সংমিশ্রিত সংস্কৃতিতে বিভিন্ন ধর্মের প্রভাব রয়েছে। প্রবাসের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের পরিচিতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি কালচার, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা থেকে ক্রমশ দুরে সরে যাচ্ছে। কুয়েতে নেই কোন বাংলাভাষার শিখার কোন প্রতিষ্ঠান বা স্কুল। কুয়েতে জন্ম নেওয়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের সন্তানদের বাংলাদেশের কৃষ্টি, কালচার, ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে যতটুকু শিখতে পেরেছে তা কিছুটা মা-বাবার কাছে অথবা ইউটিউব বা বাংলাদেশ দূতাবাস ও কমিউনিটি কর্তৃক অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে। কুয়েতে বাংলাদেশি অধ্যূষিত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে শোভা পাচ্ছে বাংলা। কুয়েত সিটি, ফাহাহিল, আব্বাসিয়া, খাইতান, ফরওয়ানিয়া সহ বাংলাদেশি অধ্যূষিত অঞ্চলে বাংলাদেশি মালিকানাধীন অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বাংলায়। কুয়েত প্রবাসী অভিবাকরা চিন্তিত তাদের সন্তানদের নিয়ে। অসংখ্য শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবময় বাংলাদেশের রয়েছে কত ইতিহাস। এই ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা দিতে তারা তাদের সন্তানদের বিভিন্ন বাঙ্গালী অনুষ্ঠান অথবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে উৎসাহিত করান। কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশী নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশে সম্পর্কে জানাতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, কৃষ্টি কালচার নিয়ে আরো বেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রয়োজন মনে করেন। কুয়েতে পূর্বে কিছু সংগঠনের সহৃদয়বান প্রবাসীরা সদইচ্ছায় বাংলা লেখা পড়া সহ বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষা দিতে কুয়েতের বিভিন্ন প্রান্তে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে যেতেন। বিভিন্ন কারনে বর্তমানে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন সংগঠনের সেই শিক্ষার কার্যক্রম। নতুন প্রজন্মকে বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ করতে এমন শিক্ষা কার্যক্রম আবার চালুর করার আশা ব্যক্ত করেন প্রবাসী অভিবাবকরা।
Discussion about this post