কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: কসবায় ৩ বাড়িতে দুর্ধষ ডাকাতি, ৪ জন আহত জনতার গণপিটুনীতে এক ডাকাত নিহত । ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ৩ বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদের অস্ত্রের আঘাতে ৪ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে জনতার গণপিটুনীতে ডাকাত হোসেন আলী (৩২) গতকাল রোববার (২৫ মে) দুপুরে মারা গেছে।
পুলিশ বলছেন; জনতার গণপিটুনীতে নিহত ডাকাত হোসেন আলী আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।
নিহত ডাকাত হোসেন আলী, হবিগঞ্জের সায়েস্তাগঞ্জ থানার শরিফপুর গ্রামের রবি মোল্লার পুত্র।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে; কসবা উপজেলার মেহারী গ্রামের আলী আহাম্মদের পুত্র আল-আমিন ভূইয়া ও মুছন ভ’ইয়ার বাড়িতে গত শুক্রবার (২৩ মে) গভীর রাতে ২৫/৩০ জনের একটি অস্ত্রধারী ডাকাত দল ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে তাকে অস্ত্র দিয়ে জিম্মি রেখে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নগদ ২০ হাজার টাকা, ২ ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল সেট লুট করে।
একই সময় সামছু মিয়ার বাড়িতেও ওই ডাকাত দলেরই লোকজন ঘরে দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে তাকে মারধোর করে ৭০ হাজার টাকা, ২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২টি মোবাইল সেট লুট করে । ডাকাতির সময় ডাকাত দলের সাথে ৩ বাড়ির লোকজনদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ডাকাতদের আঘাতে আল-আমিন (২৬), মুছন মিয়া (২৮) আলী আহাম্মদ (৭০) ও রুহুল আমিন (২২) আহত হয়। ওই সময় তাদের চিৎকারে আশে-পাশের লোকজন দৌড়ে আসে।
এ সময় ডাকাতরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় হোসেন আলী (৩২) নামের এক ডাকাতকে আটক করে গণপিটুনী দিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখে। গত শনিবার সকালে (২৪ মে) সকালে স্থানীয় ছোটন মিয়া ও ইব্রাহিম মিয়া সিএনজি চালিত অটোরিক্সা দিয়ে ডাকাত হোসেন আলীকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শনিবার দুপুরে গৃহকর্তা আলী আহাম্মদের ছেলে রুহুল আমিন বাদী হয়ে থানায় একটি ডাকাতি মামলা করে।
পুলিশ পাহাড়ায় হোসেন আলীকে গত শনিবার কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে গতকাল রোববার সকালে হোসেন আলীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিচারিক হাকিমের আদালতে পাঠালে আদালত তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপতালে নেয়ার পথে গতকাল রোববার দুপুরে হোসেন আলী মারা যায়।
মুছন ভুইয়ার স্ত্রী বিউটি আক্তার বলেন; ডাকাতরা তার স্বামী সহ তাদেরকে বেদম মারধোর করেছে। টাকা না দিলে তার ৬ বছরের ছেলেকে নিয়ে যাবে বলে ডাকাতরা তাকে হুমকি দেয়। তাদের দুই ঘর থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা, ২ ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে। ডাকাতদের অস্ত্রের আঘাতে তাদের বাড়ির ৪ জন আহত হয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন; ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। জনতার হাতে আটক ডাকাত হোসেন আলী গুরুতর আহত হলে স্থানীয় লোকজনই তাকে কসবা হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়। গতকাল রোববার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তাকে হাসপাতালে প্রেরণ করেন। হাসপাতালে নেয়ার পথে হোসেন আলী মারা যায়। বর্তমানে লাশটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। তিনি বলেন; খোজ নিয়ে জানা গেছে; নিহত হোসেন আলী আন্ত জেলা ডাকাত দলের সদস্য। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতির মামলা রয়েছে।
নবীনগর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সফিউল আলম বলেন; ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। অন্য জেলা থেকে এসে এ এলাকায় ডাকাতি করতে এসে হোসেন আলী জনতার গণপিটুনীতে মারা গেছে।
Discussion about this post