শাহবাগে নবপ্রজন্মের গণজাগরণের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম রব। গতকাল দলের পক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ডিআরইউ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। রব বলেন, মহা অপরাধে মহা শাস্তি হওয়া উচিত। লঘু শাস্তি হওয়ায় নতুন প্রজন্ম প্রতিবাদে জেগে উঠেছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্ম এত গভীরভাবে ধারণ করে দেখে আমি অভিভূত। আমরা আমাদের দল জেএসডির পক্ষ থেকে শাহবাগের এই গণজাগরণের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। মুক্তিযুদ্ধের নতুন প্রজন্মের এ লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে। একই সঙ্গে লক্ষ্য রাখতে হবে, কোন লোভ-লালসা, আন্দোলন দলীয়করণের পাঁয়তারা কেউ যেন না করতে পারে। দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে অভূতপূর্ব গণজাগরণ ও প্রাণশক্তির স্ফুরণ ঘটেছে। গণজাগরণের এ ঢেউ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে বিশ্বের যেখানে বাঙালি আছে, সেখানেই ছড়িয়ে পড়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে সমবেত জনগণ এখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার চেতনা ও অনুপ্রেরণা খুঁজে পেয়েছে। তিনি বলেন, স্বধীনতার পর থেকে দলীয় স্বার্থে দেশ চালানোর চেষ্টা চলছে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে নয়। তাই ক্ষমতায় থাকা ও যাওয়ার স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার প্রতিযোগিতা চলে আসছে। এতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিলম্ব হয়েছে। এ সুযোগে তারা রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এ অবস্থার অবসানে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলে জাতির জন্য ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে। এ সময় তিনি দলের পক্ষে কিছু দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও সব অপশক্তির উত্থান রোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল আইন, তদন্ত দল ও আইনজীবী টিমকে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার উপযোগী করতে হবে। জামায়াত-শিবিরসহ যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত দল ও সংগঠনসমূহকে আইনিভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। পুরানো আইন-কানুন, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোসমূহ উপনিবেশিক ধাঁচের রাজনীতি, রাষ্ট্র-ব্যবস্থাপনা ও সংবিধান বদল করে সব কিছুকে স্বাধীন দেশের উপযোগী করার আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির খুনিদের এখনও চিহ্নিত না করা ও বিচার শুরু না করতে পারায় দলের পক্ষে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সহ-সভাপতি এম এ গোফরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, সিরাজ মিয়া, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, তৌহিদ হোসেন প্রমুখ।
http://www.mzamin.com/details.php?nid=NDI2MjA=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ==
Discussion about this post