মোশাররফ হোসেন শুভ, ময়মনসিংহ থেকে ঃ তাজুল ইসলাম বাবলু। বাড়ী ময়মনসিংহের ফুলাবাড়ীয়া উপজেলার ৫নং দেওখোলা ইউনিয়নে। বাবা কোরবান আলী ছিলেন দেওখোলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। বার বার নির্বাচন করতে গিয়ে জমি জমা সহায় সম্ভল প্রায় সবটুকুই হারিয়ে ছিলেন তিনি। এর পর উপায়ন্তর না দেখে তাজুল ইসলাম বাবলু চলে যান ফুলবাড়ীয়া আসনের সংসদ সদস্য এড. মোছলেম উদ্দিনের সংস্পর্শে। এক পর্যায়ে বনে যান এমপির পিএস। বুল পাল্টে যায় তার। ধীরে ধীরে করায়ত্ব করেন ক্ষমতা। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সহ উপজেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতারাই দরাশায়ী হয় তার হাতে। এমপি’র পিএস বনে যাওয়ার সুবাদে নানা দিক থেকে উপার্জন করতে থাকেন অর্থ। সংসদ নির্বাচনের আগেও দিনাতিপাত করতে যার পরতে হত নানা সমস্যায়। তিনি এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক। তিনি গত নির্বাচনে ৫নং দেওখোলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে অবৈধ টাকার ছড়াছড়ি ও ক্ষমতা দাপটে চেয়ারম্যন পদে নির্বাচিত হন। এতে আরো বেড়ে যায় তার ক্ষমতা ও অর্থ উপার্যনের রাস্তা। চেয়ারম্যান হওয়ার পর ক্ষমতাকে পুঁজি করে নেমেছেন অনেক ব্যবসায়। শালীশির নামে উৎকোচবাজী, মদ, গাঁজা, জুয়াসহ নারী দিয়ে দেহ ব্যবসায় জুড়ি নেই তার। এমনকি সম্প্রতি হিরোইন, ইয়াবা টেবলেট ব্যবসার সম্রাট বনেছেন তিনি। ঘটনাটি ফাঁস হয়ে গেলে সম্প্রতি র্যাব, পুলিশ ছায়তানতলার এক বাসা থেকে উর্মি নামের এক মহিলাকে ১৫০০টি ইয়াবা টেবলেটসহ গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ঘটনার অন্তরালে তাজুল ইসলাম বাবলুই মূলত তাদের দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এছাড়া বাবলু চেয়ারম্যান ভিজিডি, ভিজিএফ, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, টিআরসহ বিভিন্ন উপায়ে কর্মসূচীর টাকা লুটপাটের নেশায় মেতে উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মেম্বার বলেন, আমরা মেম্বার হয়ে কোন প্রকল্পের কাজ পাচ্ছিনা। চেয়ারম্যান সবকিছু গিলে খাচ্ছে। অথচ জনগন আমাদের ভুল বুঝছে। আমরা চেয়ারম্যানের সাথে আতাত করে টাকা পয়সা লুটপাট করছি। অথচ আসল সত্যটা হচ্ছে আমরা এসব প্রকল্পের কোন কিছুই জানিনা। চেয়ারম্যান একাই লুটপাট করছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রায আড়াই লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ কেটেও গাছ খাদক দসুররা উল্টো সংশ্লিষ্ট পিওন চাপরাশি চৌকীদারকে অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ করেন। শুধু তাই নয় ফুলবাড়ীয়া থানার দারোগা অহিদুলকে দিয়ে সাদা কাগজে জোর করে তাদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে তাজুল ইসলাম বাবলু। লিখিত অভিযোগে বাবলুর বিরুদ্ধে বৃক্ষ চোরাই করে বিক্রি করে দেয়া প্রকাশ্যে বৃক্ষনিধন এমনকি গাছ কেটে ফেলারও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সরকারী বৃক্ষের এই হেনস্তা সরেজমিন না করলে বোঝা যাবে না। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাবলুর বৃক্ষচুরি করার জোগান দেয়া, বৃক্ষকেটে ফেলার হুকুম আর সেই মামলা রজু করে চৌকীদারদের বিরুদ্ধে। এই হাস্যকর ঘটনাও সৃষ্টি করে চেয়ারম্যান বাবলু মহিলা কর্মীদের সে ভয়ন্তর অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে যা ভাষা অযোগ্য। অভিযোগে আরো জানা যায়, ফুলবাড়ীয়ার দেওখোলা বাজার থেকে বৈরাগী বাজার পর্যন্ত স্থানীয় সরকার পরিষদের আর/১-০৭ রাস্তার দুই পাশে ১৯৯৮ সনে দিশারী সমাজ কল্যান সমিতি কেয়ার বাংলাদেশের অধীন আর্থিক সহায়তায় সমন্বিত খাদ্য উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতার বৃক্ষ চাষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। কিন্তু গত ৩ জুলাই ২০১২ ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাবলু সংশ্লিষ্ট এলাকার ফজলুর চেয়ারম্যানের কর্মচারী তাহের, বারেক মেম্বারের কিছু সাঙ্গ পাঙ্গ নির্দেশ দেয় প্রায় ২৫টি গাছ কেটে বিক্রি করে দিতে। সবাই চেয়ারম্যান বাবলুর নির্দেশপালন করে গাছগুলো কেটে বিক্রি করে দেয়। যা পরমূল্য দাড়ায় আড়াই লক্ষ টাকা। ফলে উপকার ভোগীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে চেয়ারম্যান বাবলুর সংশ্লিষ্ট জনকে বলে রাস্তার মরা গাছ কেটে ফেলার নিয়ম চুক্তি পতে রয়েছে অথচ মরা তো দুরের কথা কর্তৃনকৃত গাছগুলো সবই ছিল মূল্যবান ও তরতাজা। চেয়ারম্যান ধরা পরে যাবার কারনে গত ১২ জুলাই ফুলবাড়ীয়া থানা থেকে দারোগা অহিদুল সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এসে উল্টো কর্মচারীদের ফাঁসিয়ে দেয়। এবং সাদা কাজগে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষর করায়। আরো জানা গেছে, তিনি এর আগেও প্রায় ৫ লক্ষ টাকার গাছ নিজের পেশীর জোরে অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করে নিজেই হাতিয়ে নিয়েছিল। এই ঘটনার সুষ্টু তদন্ত ও আইনানুগ বিচারদাবী করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। এদিকে দেওখোলা বাজারের সরকার মেডিকেল হল চেয়ারম্যানে অবৈধ ব্যবসার অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখান থেকেই মদ, গাঁজা, ইয়াবা টেবলেট ছাপলাই করা হয়। রাতের আধারে সরকার মেডিকেল হলের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান রানা সহযোগিতায় রাতবর চলে দেহব্যবসা। চেয়ারম্যান বাবলু মদদাতা হওয়ায় এলাকার কেউ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা।
গৌরীপুর পৌর এলাকার ছাত্রাবাসে ডাকাতি ॥ আহত-১
মোশাররফ হোসেন শুভ, ময়মনসিংহ থেকে ঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা সদরের পৌর এলাকার ছয়গন্ডা মহল্লার একটি ছাত্রাবাসে মঙ্গলবার (৭ আগষ্ট) রাত সাড়ে বারটার দিকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘঠিত হয়েছে। ১৫/২০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাতদল এসময় বিভিন্ন বাসাবাড়ী থেকে ১০টি মোবাইলসেট ও প্রায় অর্ধলক্ষাধিক নগদ টাকা লুঠ করে নিয়ে যায়।
সরজমিনে জানা যায়, গৌরীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ছয়গন্ডা মহল্লার মোঃ ফেরদৌস তালূকদারে ছাত্রাবাসে মঙ্গলবার রাত সাড়ে বারটা দিকে ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত ১৫/২০ জনের একদল ডাকাত প্রথমে শাহীন মিয়া, ও এমদাদুল হকদের ছাত্রাবাসে ডুকে ডাকাতি করে ৮টি মোবাইলসেট সহ নগত প্রায় ২০হাজার টাকা নিয়ে যায়। এসময় ডাকাত দল শাহীন মিয়াকে জিম্মী করে তাকে দিয়ে পাশের রুমের ৪নং মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ জুলহাঁস উদ্দিনের ঘরের দরজা খুলিয়ে রুমে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে নগত আরো ১০হাজার টাকা সহ ১টি মোবাইল নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরই ডাকাতদল একই এলাকার জেসান জুস কম্পানি বিক্রয় কর্মকর্তা মুকুল মিয়ার রুমে প্রবেশ করে নগত ১৫হাজার ৫শ টাকা, একটি সাইকেল ও ১টি মোবাইল নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাত দলের হামলায় এমদাদুল হক নামে একজন আহত হয়। উক্ত ঘটনাটি নিয়ে গৌরীপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এলাকাবাসী জানায়, এ এলাকায় অহরহ চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় গৌরীপুর থানা অনেকে জিডি করা হলেও তারা যেন দিনদিন সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মী হয়ে পড়েছে।
বাকৃবিতে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ।
মোশাররফ হোসেন শুভ, ময়মনসিংহ থেকে ঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতির আয়োজনে বাকৃবি কমিউনিটি সেন্টারে গত সোমবার (০৬/০৮/২০১২) দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আবদুর রহমান সরকার ্এর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিন্ডিকেট সদস্য আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এম.পি. এবং বাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল হক। সিন্ডিকেট সদস্য আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এম.পি বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং দেশের উন্নয়নে কৃষি বিজ্ঞাণীদের আরও এগিয়ে আসার আহবান জানান । তিনি পরম করুনাময় আল্লাহ তালার নিকট সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমহলের প্রত্যাশা পূরণে দলমত নির্বিশেষে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যেতে চাই । এ লক্ষ্যে আমি সকলের সার্বিক সহযোগিতা একান্তভাবে প্রত্যাশা করছি । অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামছুদ্দিন । পরে সকলের সৌজন্যে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফাঁসি কার্যকরের দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবর বাকৃবি ছাত্রলীগের স্মারকলিপি পেশ
মোশাররফ হোসেন শুভ, ময়মনসিংহ থেকে ঃ বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবীতে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগ সোমবার (৬ আগস্ট ২০১২) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. রফিকুল হকের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। ছাত্রলীগ বাকৃবি শাখার সভাপতি মোঃ শামছুদ্দিন আল আজাদ এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুজ্জামান ইমন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, আগস্ট মাস শোকের মাস। বাঙালী জাতির জীবনে সবচেয়ে বেদনাদায়ক মাস। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারবর্গসহ অন্যান্যদের হত্যার মধ্যদিয়ে বাঙালী জাতির এক কলঙ্ক জনক অধ্যায় রচিত হয় । দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের রায়ের আংশিক কার্যকর করার মাধ্যমে জড়িত কয়েকজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তবে আরো কয়েকজন হত্যাকারী এখনো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কুটনৈতিক দক্ষতার মাধ্যমে বিদেশে পলাতক খুনীদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর দেখার জন্য সারা বাংলার ছাত্র সমাজসহ দেশবাসী অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে ।
Discussion about this post