মোবারক বিশ্বাস বাংলার বার্তা সংবাদদাতাঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলায় চলতি মৌসুমে রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এবং অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ করায় এবার বিনা হালে চাষ করা রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার মাঠে মাঠে রসুন তোলার ধুম পড়েছে। নারী, পুরুষ এমনকি শিশুরাও নেমে পড়েছে রসুন তোলা, শুকানো এবং পরিবহনের কাজে। ইতিমধ্যে এ উপজেলায় ৭০ ভাগ জমির রসুন তোলা শেষ হয়েছে। বাজারে নতুন রসুন বেচাকেনা শুরু হয়েছে। কিন্তু রসুনের দাম তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন চাষীরা। বর্তমানে উপজেলার হাটবাজারে ১ হাজার থেকে ১১শ’ টাকা মণ রসুন বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বীজের দাম কম থাকায় এবং এ বছর ভাল দাম পেলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে-এ আশায় চাষীরা অধিক হারে রসুনের চাষ করেছিল। রসুনের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ করে প্রতি হেক্টরে রসুনের উৎপাদন হয়েছে ৭মেঃ টন। বাজারে বর্তমানে ১ হাজার টাকা মণ দরে রসুন বিক্রি হওয়ায় কৃষকের লোকসান হচ্ছে। চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা, নিমাইচড়া, হান্ডিয়াল, হরিপুর ও বিলচলন ইউনিয়নে বিনা হালে রসুনের আবাদ সবচেয়ে বেশি। কৃষকরা জানান, এবার পুরো মৌসুম জুড়ে অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ করায় রসুন বীজের অঙ্কুরোদগম ভাল হয়েছে। তাছাড়া প্রয়োজনীয় সেচ ও সার সরবরাহ পাওয়ায় রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষীরা সকাল সন্ধ্যা দিনমজুর, নিজে ও স্ত্রী-পুত্রদের সাথে নিয়ে জমি থেকে রসুন তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এমনকি রাত জেগে রসুনের জমি পাহাড়া দিচ্ছেন তারা। উপজেলার ধানকুনিয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন, আঃ গণি, ছাইকোলার কৃষক হারেজ উদ্দিনসহ অন্যরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষ ও ঘরে তোলা বাবদ প্রায় ৬০জন শ্রমিক লাগছে। তাদের শ্রমমূল্য ও খাবারের জন্য খরচ হয় ১৮ হাজার টাকা। তাছাড়া বীজ, সার, ওষুধ ও সেচ দিতে আরো প্রায় ১৫ হাজার টাকা লাগে। সব মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ৩৩/৩৫ হাজার টাকা। ভাল ফলন হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে ২০/২৫ মণ করে রসুন পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে এক বিঘা জমির রসুন বিক্রি করে বর্তমান বাজার মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে ২৬/২৮ হাজার টাকা। কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে ৬/৮ হাজার টাকা। চাটমোহর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রওশন আলম জানান, চলতি বছর সেচ ও সারের সংকট না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বিনা হালে রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বর্তমানে বাজার দর কম। তিনি আশা করেন কিছুদিনের মধ্যেই রসুনের দাম বাড়বে। অপরদিকে পাশ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৬শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ করা হয়েছে। এ উপজেলার কৃষকেরা এবার ৫৫ হাজার ২শ’ মেঃটন রসুন উৎপাদন করবে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খয়ের উদ্দিন মোল্লা জানান। বড়াইগ্রাম উপজেলার কৃষকরা হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, রসুনের বাম্পার ফলন হলে কি হবে, বাজারে দাম কম থাকায় তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তারা এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের দাবি জানান।
পাবনা চাটমোহরে নিচে নেমে গেছে পানির স্তর বিদ্যুতের লোডশেডিং অব্যাহত
মোবারক বিশ্বাস বাংলার বার্তা সংবাদদাতাঃ পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়াসহ চলনবিল অধ্যুষিত উপজেলা সমূহে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকুপে পানি উঠছে না। শুকিয়ে গেছে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, জলাশয়। জমিতে সেচ দিতে কৃষক পড়ছেন বিড়ম্বনায়। এ অবস্থায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে। বিদ্যুৎ না পাওয়ায় অনেক স্থানে কৃষক শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে পানি উত্তোলন করে জমিতে সেচ দিচ্ছে। এখন বোরো ধানের থোর বের হবার সময়। বিদ্যুতের অভাবে সেচকাজ ব্যাহত হওয়ায় বোরোর ফলন ব্যাহত হবে বলে আশংকা করছেন চাষীরা। এ অঞ্চলের পুকুর গুলো শুকিয়ে গেছে। ফলে পানির তীব্র সংকট চলছে। এ অঞ্চলে পানির ব্যবহার নিয়ে কাজ করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিএডিসি’র পানাসি প্রকল্প ও বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। পানাসি প্রকল্পের চাটমোহর জোন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পানির স্তর ৩৫-৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে। পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে গেছে। বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এতে ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
Discussion about this post