বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার ধুনটে চলতি বছর আগাম বন্যায় ১৪০০ কৃষকের প্রায় ১ কোটি ৭লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা নদী ফুঁসে উঠে। নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে পানি নদীর কুল উপচে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরিন গ্রাম গুলো প্লাবিত হয়। এছাড়া গত ৩০ জুন ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের কৈয়াগাড়ীতে বন্যা নিয়ন্ত্রান বাঁধ ভেঙ্গে বিরা অঞ্চলের প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ফলে বন্যা দূর্গত এলাকার ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ১০কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা, ৪হাজার ১০০টি পরিবারের সাড়ে ৬হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, আগাম বন্যায় দূর্গত এলাকার ২৬৭হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ১৬৩.৯০হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতির তথ্যচিত্রে উল্লেখ করা হয়, দূর্গত এলাকায় ৩০৫০হেক্টর পাট চাষ হয়। এরমধ্যে ১৮৭হেক্টর জমির পাট পানিতে আক্রান্ত হলে ১১৫হেক্টর জমির পাট সম্পন্ন ক্ষতি হয়। এতে ৫০০জন পাটচাষীর প্রায় ৮০লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১৮৫হেক্টর জমিতে কৃষক আউশ ধান চাষ করে। এরমধ্যে ৩৫ হেক্টর জমির আউশ ধান বন্যায় আক্রান্ত হলে ৩১.৫০হেক্টর জমির ধান সম্পন্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে ২০০জন আউশ চাষীর প্রায় ৯ লাখ ৩৭হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ৩৫০ হেক্টর আমন বীজতলার মধ্যে ১৫হেক্টর আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে ৪.৫০হেক্টর বীজতলা বিনষ্ট হয়ে ৩০০কৃষকের প্রায় ৪লাখ ৮০হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। দূর্গত এলাকার ৩ হেক্টর জমিতে ১০০জন কৃষক মরিচ চাষ করে। তাদের ১০হেক্টর জমির মরিচ বন্যায় আক্রান্ত হলে প্রায় ৬হেক্টর জমির মরিচ বিনষ্ট হয়। এতে কৃষকের প্রায় ৬লাখ ৩০হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ৬৩০হেক্টর জমির শাক সবজির মধ্যে ২০হেক্টর জমি বন্যার পানিতে আক্রান্ত হয়। এতে ৭হেক্টর জমির শাক-সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়ে ৩০০জন কৃষকের প্রায় ৬লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মোট ১৪০০জন কৃষকের পাট, আউশধান, আমন বীজতলা, মরিচ ও শাক-সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়ে প্রায় ১কোটি ৬লাখ ৪৭হাজার ৫০০টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
ধুনট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, বন্যায় প্রায় ১৬৪হেক্টর জমির ফসলের সম্পন্ন ক্ষতি হয়। এতে ১৪শ কৃষকের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকারি ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারি সহযোগিতা প্রদানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
Discussion about this post