বিডিনিউজ- ‘বাচ্চু রাজাকার’ হিসাবে পরিচিত আবুল কালাম আজাদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারো ‘সহায়তায়’ ভারত পালিয়েছেন- কার্যত এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
“আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের কাছে খুঁটিনাটি অনেক তথ্য থাকে” উল্লেখ করে কমিশন চেয়ারম্যান বলেছেন, “হাইজ্যাকার, যারা হাইজ্যাক করতে গেছে তারা কোন সেলুনে চুল কেটেছে, কোন স্টলে বসে চা খেয়েছে এইসব তথ্যও তাদের [আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য] কাছে থাকে।”
“যাকে এত বেশি নজরদারিতে রাখা হয় এমন একজন কীভাবে পালিয়ে যেতে পারে?”
“যখন জানা যাচ্ছিল যে কোনো মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে; তখন তো এটা প্রত্যাশিত যে নিশ্চয়ই তার ওপর নজরদারি রয়েছে যেন সে পালিয়ে যেতে না পারে,” এ মন্তব্য করে মিজানুর বলেন, “এটা আমাদের আশঙ্কা, আমাদের ধারণা, নিশ্চয়ই কারো না কারো সাহায্য ব্যাতিরেকে উনি এতদূর বর্ডার ক্রস করে চলে যেতে পারতেন না।”
যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তারে গত ৩ এপ্রিল দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরোয়ানা জারির দিন আজাদের বাড়িতে ও কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে না পেলেও পুলিশ তখন বলেছিল, আজাদ তাদের নজরদারিতে আছেন।
আবুল কালাম একাত্তরে ফরিদপুরে ‘বাচ্চু রাজাকার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে ‘সক্রিয়’ এই ব্যক্তি গত ৩০ মার্চ ঢাকা ছেড়ে গত ২ এপ্রিল উত্তরাঞ্চলের হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান বলে সোমবার জানায় র্যাব।
আজাদের আটক দুই ছেলে ও শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সেদিন র্যাবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ইউসুফ নামের সাবেক এক শিক্ষক তার গাড়িতে করে ‘বাচ্চু রাজাকারকে’ হিলি সীমান্তে নিয়ে যান।
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ‘আন্তর্জাতিক বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস-২০১২’ উপলক্ষে দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সেমিনার শেষে।
‘বাচ্চু রাজাকারকে’ ফিরিয়ে আনায় ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মিজানুর রহমান বলেন, “ইন্টারপোল আপনাকে কী সহায়তা দেবে? বড় জোর তারা দেখিয়ে দিতে পারেন যে, এই লোকটা এখানে আছে বা তাকে আমরা লোকেট করতে পেরেছি।”
অন্য দেশ থেকে আজাদকে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সঙ্গে ‘দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা’র প্রয়োজন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রকে বলতে হবে যে আমি তাকে ফিরিয়ে দিতে রাজি আছি। এখন যদি উনি পাকিস্তানে পালিয়ে যান? সৌদি আরবে পালিয়ে যান? তখন কী হবে?”
“এই রাষ্ট্রগুলো তো এই বিচারকে সমর্থন করে না,” বলেন তিনি।
‘বাচ্চু রাজাকারকে’ দেশে ফেরত আনতে পুলিশি সহায়তার আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে বলে মঙ্গলবার জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।
Discussion about this post