তৈয়বুর রহমান টননি ইয়র্কঃ রংবেরং এর বাহারী সাঝঁ সজ্জায় এসে ছিল সব ধরনের নাড়ি পরুষ ও শিশুরাও মনে হচ্ছিল ঈদ। আর ঈদ আসার আগে ঈদের মিলন মেলা। জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী জেমসের কণ্ঠে গান মেলার দোকানে শাড়ি গয়না নিয়ে দর কষাকষি, সব বয়সের বাঙালির উচ্ছ্বাসে মেলার কয়েক ঘণ্টা ব্রুকলিনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকা যেন পরিণত হয় একখণ্ড বাংলাদেশে ঈদের মিলন মেলা। গত রবিবার ৯ই জুন চার্চ ম্যাকডোনাল্ড বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (সিএমবিবিএ) ৮ম বারের মতো সার্থক এই পথমেলার আয়োজন করে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এ মোমেন, মো. মনিরুল ইসলাম সহ আরো অনেকেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পথমেলা কমিটির আহবায়ক এন আমিন, সিএমবিবিএর সভাপতি ফখরুল হক ও সদস্য সচিব জাহিদ মিন্টু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সিএমবিবিএর সেক্রেটারি মো. আলী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে নির্বাচনী প্রচার চালান নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী (ডেমক্র্যাট) বিল ডি ব্লাসিও। মেয়র নির্বাচিত হলে প্রবাসী বাঙালিদের স্বার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ব্রুকলিনের ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি (ডেমক্র্যাট) কেন থমসনও প্রতিশ্রুতি দেন, অভিবাসীরা যাতে অযথা হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি তারা দেখবেন। সাভারে রানা প্লাজা ধসে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। আরোও বক্তব্য রাখেন পিপল টেকের আবু হানিফ, ওয়েল কেয়ারের সালেহ আহমেদ, আবুল হাসান প্রমূখ। ম্যাকডোনাল্ড এলাকায় রাস্তার ওপর এ মেলায় বাঙালি খাবার আবার বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক দোকান সাজিয়ে বসেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। মেলার এক পাশে মঞ্চে চলে নাচ, গান আর আলোচনা। শুরুতে চারুকন্ঠের শিল্পীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। প্রবাসের খ্যাতিমান শিল্পী শাহ মাহবুব, ফারজানা পপি, কাজী শুভ, খায়রুল বাশার, বেলাল, নুরুজ্জামান লাল্টু, ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত শিল্পী নওরীন এবং এই প্রথমবারের মতো আউটডোর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী জেমসও এই মেলায় গান পরিবেশন করেন। পুরো মেলা এ সময় গানের তালে নেচে ওঠে। মেলার মঞ্চে আলোচনার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রবাসীদের সম্মাননা দেয়া হয়। এরই ফাঁকে আমেরিকায় জন্ম নেয়া বাংলাদেশি শিশুদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় নাচ। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস-বিপা এই শিশুদের বাংলা গান ও নাচ শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে। মেলার এই উচ্ছ্বাসে মুগ্ধ হন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারাও। আয়োজকদের অনুরোধে মেলার সময় তারা বাড়িয়ে দেন দেড় ঘণ্টা। মেলায় খাবারের স্টলগুলোতে যাতে নিম্নমানের খাবার বিক্রি না হয়, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শকদের সে বিষয়ে তৎপর থাকতে দেখা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো স্টলকেই জরিমানা করতে হয়নি তাদের। সিএমবিবিএ অস্টমবারের মতো এই মেলায় আয়োজন করে। স্থানীয় পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০ হাজারেরও বেশি বাঙালির সমাগম ঘটে মেলায়। মেলার মূল আকর্ষন ছিল রাফেল ড্র। রাফেল ড্র তে ছিল ১১টি পুরস্কার। ১ম পুরস্কার ছিল গাড়ী, ২য় ও তয় পুরস্কার ছিল নিউ য়র্ক টু ঢাকার রিটার্ন টিকেট, ৪র্থ পুরস্কার ছিল ৫৭ ইঞ্চি প্লাজমা টিভি, ৫ম পুরস্কার ছিল হোম থিয়েটার, ৬ষ্ঠ পুরস্কার ছিল মনিটর, ৭ম ও ৮ম পুরস্কার ছিল ডিজিটাল ক্যামেরা, ৯ম ও ১০ পুরস্কার ছিল সেল ফোন ও ১১তম পুরস্কার ছিল শাড়ী। ৫ ডলারের বিনিময়ে এই রাফেল ড্র’ র পুরস্কার প্রাপ্তির আশায় মেলায় আসা দর্শকরা টিকেট কিনেছিল মেলার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। ১ম পুরস্কার প্রাপ্ত নাম্বারগুলো হলো ২৩৯৬৫৫৫৩৭, ২য় ৬৯১৩৪৭৪২৯, ৩য় ২৩৯৬৫৪৬১২, ৪র্থ ১৩৯৬৫৪৬৪১, ৫ম ৯৬৩১৫৭০৩৬, ৬ষ্ঠ ১৩৯৬৫৫২৭৬, ৭ম ৯৬৩১৫৭৪৬১, ৮ম ১৩৯৬৫৫৫২৬, ৯ম ৯১৩৬৫১৭৭১, ১০ম ১৩৯৬৫৫১৩৮ এবং ১১ম ৩১৬৯৩৪৩১৭।
Discussion about this post