নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী পালন সভায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতৃবৃন্দ জিয়ার আদর্শে উদ্দীপ্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সকল অনিয়ম, অত্যাচার, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, জেল-জুলুম-নির্যাতন, গ্রেফতার, গুম, খুন, হত্যা, মামলার বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন।
সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতেন্ত্রের প্রবর্তক। আর আওয়ামী লীগ সরকার বাকশাল কায়েম করে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলো। শেখ হাসিনা সরকার আবারো বাকশালীয় কায়দায় দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করতে চাচ্ছেন। বক্তারা বলেন, জিয়ার আদর্শের সৈনিকরা বেঁচে থাকতে শেখ হাসিনার স্বপ্ন সফল হতে দেয়া হবে না। দেশ ও প্রবাসের সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাসিনা সরকারের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯ জানুয়ারী ছিলো শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকী। শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ব্যানারে গত ১৯ জানুয়ারী সন্ধ্যায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিএনপির উদ্যোগে জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মনোনীত বিএনপি’র বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত ডা. মুজিবর রহমান মজুমদার। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মনোনীত বিএনপি’র অপর বিশেষ উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত জাহিদ এফ. সরদার সাদী , বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ ড. শওকত আলী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল সাঈদ মোহন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল হক মিলন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও যুক্তরাস্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু, সাবেক ছাত্রনেতা ডা. গুলজার ও আব্দুস সবুর এবং অধ্যক্ষা রোকসানা খানম।
সভায় টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কেন্দ্রিয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জনাব নাজিম উদ্দিন আলম। জনাব আলম বলেন, দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে বিএনপিকেই দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে শক্ত হাতে। দেশের মানুষ ৫ জানুয়ারির ভোট বর্জনের মধ্যে দিয়ে আওয়ামীলীগকে বর্জন করেছে। বেগম জিয়া দেশের মানুষের স্বার্থে এই ছল চাতুরির নির্বাচন বর্জন করেছেন। দেশের মানুষ এখন চায় বিএনপি’কে।
জনাব আলম আরও বলেন, ২০ জানুয়ারি ঢাকার সফল সমাবেশ প্রমান করে দেশে আওয়ামীলীগের সময় শেষ। তিনি দেশে বিদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এক হয়ে বেগম জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করার আহবান জানান।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে কেক কেটে সভায় ডা. মুজিবর রহমান মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোন নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না। আমরা যেভাবে প্রবাস থেকে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়েছিলাম, যেভাবে মইনউদ্দিন ফখরুদ্দিন সরকারের পতন ঘটিয়েছিলাম ঠিক সেভাবে বর্হিবির্শ্বে বাংলাদেশীদের সংগৃহীত করে এই নব্য বাকশালী সরকার ও ভারতীয় সেবাদাসের সরকারকে পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের জনগণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তরুণ প্রজন্মের অহংকার তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করবে ইনশাল্লাহ।
জাহিদ এফ. সরদার সাদী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্ব বেহায়া ও নব্য বাকশালী সরকার ৯৫% মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। আর্মি, যৌথ বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, আনসার, বিজিপি এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যৌথ পাহারায়ও জনগণকে ভোটকেন্দ্রে অংশগ্রহন করাতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের নেতৃবৃন্দ জেনে গেছে শেখ হাসিনার কোন লাজ লজ্জা নেই। বিশ্ব বেহায়া ও মিথ্যাবাদি হিসাবে তার নাম গ্রীনিস বুকে লিপিবদ্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ৫% ভোট পড়লেও দলীয় নির্বাচন কমিশন নিলর্জ্জভাবে ৪০% ভোট পড়েছে বলে দাবী করছেন। এতে প্রমাণ হয়েছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জনগণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে শত:স্ফ’র্তভাবে সাড়া দিয়ে এক দলীয় অবৈধ নির্বাচন প্রত্যাখ্যাণ করেছে। এজন্য তিনি বাংলাদেশের আপাময় গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক জনগণকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। জাহিদ এফ. সরদার সাদী আরো বলেন যে সমস্ত দেশপ্রেমিক নেতাকর্মী, বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলছেন তাদেরকেই গ্রেফতার, হত্যা, গুম অথবা বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। জনগণ থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে শেখ হাসিনা ভারতের সেবাদাসে পরিণত হয়েছে। তিনি বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের পরিচালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি ইলিয়াস আহমেদ মাস্টার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেকদলের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, বিএনপি নেতা নিয়াজ আহমেদ জুয়েল, আনোয়ার হোসেন, ছৈয়দুল হক, তোফায়েল চৌধুরী লিটন, আবুল কাশেম, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান দুলাল, পারভেজ সাজ্জাদ, জাফর তালুকদার, জাহিদ দেওয়ান শামীম, শাহাদৎ হোসেন রাজু, আহসানউল্লাহ বাচ্চু, আব্দুল গফুর, দেলোয়ার হোসেন শিপন, শেখ শাহজাহান, আকিকুর রহমান ফারুক প্রমুখ। সভায় উল্লেখ্যযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ড. তারিক জামান ইমন, লুৎফর রহমান, শেখ আব্দুল মালেক, শফিক খান, সাইফুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন, মিজানুর রহমান, গিয়াস মজুমদার , বদরুল হক আজাদ , মোজাফর হোসেন , এ . বি . সিদ্দিকি , আবু জাফর , আবুল কাসেম , রাকিব উদ্দিন দুলাল , এ. এস. এম. রাহমাত উল্লাহ দুলাল , সোহেব খান, সৈয়দ অতিকুর রাহমান ফারুক , শাহজাহান শেখ , মোবারক আহম্মেদ , মালেক হোসেন , তাহের পাটোয়ারি , মোঃ এইচ. রাহমান, মোঃ এস. হোসেন , মোঃ রাশেদ খান , শাহ আমরান , মোঃ সুরুজামান , নাসির আহমেদ , এম. এ. কুদ্দুস , আনোয়ার হোসেন , মোঃ মোশারফ , মাফুজুর রাহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post