বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : ২০১২ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সন্মিলিত মেধাতালিকায় বগুড়ার জয়জয়কার। গত বছরের রেকর্ড টপকিয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (ভিএম স্কুল) এবার বোর্ডের শীর্ষ ও বগুড়া ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ৫ম অবস্থানসহ জেলার ৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২০ তম স্থানের মধ্যে অবস্থান করে নিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে বগুড়ার সুনাম আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে। এই ফলাফলে বগুড়া জিলা স্কুল ৬ষ্ঠ, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ৮ম, এসওএস হারম্যান মেইনর স্কুল এন্ড কলেজ ১৫তম, বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ১৬তম এবং পল্ল¬ী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ) ল্যাব. স্কুল এন্ড কলেজ ২০তম স্থান লাভ করেছে।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
গত বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে ২৪৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মোট ২১৪ জন জিপিএ ৫ পেয়ে শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে তৃতীয় স্থান লাভ করেছিলো। সেই অবস্থান টপকিয়ে এবার প্রথম স্থান দখল করে ছাত্রীদের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এবার ২৩০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২১৩ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ১৭ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৬৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ ১৬২ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ২ জন। ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৫ জনের মধ্যে ৫১ জন জিপিএ ৫ ও ১৪ জন গ্রেডএ পেয়েছে। মানবিক বিভাগে ১ জন অংশ নিয়ে গ্রেড এ পেয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।
বোর্ডে ও জেলার মধ্যে প্রথমস্থান অধিকার করা বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুন জানান, প্রত্যাশিত এই ফলাফলে আমরা অনন্ত আনন্দিত। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষিকা, অভিভাবকসহ ছাত্রীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা এ ফলাফল অর্জন করতে পেরেছি। সকলের সহযোগিতায় ভবিষ্যতেও এ ফলাফল ধরে রাখতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বগুড়া ক্যান্টঃ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ঃ বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ বিগত কয়েক বছর ধরেই এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলে সাফল্যের ধারা অক্ষুন্ন রেখে চলেছে। যা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় অন্যতম স্থান দখল করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলেও বগুড়া জেলার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান এবং রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পঞ্চম স্থান দখল করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। প্রতি বছরই শতভাগ পাশের রেকর্ড গড়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা বাড়ছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
গত বছর ২২৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৪ জন জিপিএ ৫ প্রাপ্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে এবার পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ২২০ জন । এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২০৫ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ১৫ জন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫৬ জন অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছে। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৪ জন অংশ গ্রহন করে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৯ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ১৫ জন। শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশে নিয়মিত উপস্থিতি, পদ্ধতিগত পাঠদান, অধিকসংখ্যক টিউটরিয়াল ও মডেল টেস্ট, দূর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের চিহ্নিত করে বিশেষ কোচিং এর ব্যবস্থা করন, অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের তত্ত্বাবধানের ফলেই এই ধরনের সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে সকলেই মনে করেন। পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনার পর প্রতিষ্ঠানের ক্যাস্পাসে এই সাফল্যে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকবৃন্দকে আনন্দিত ও উচ্ছসিত দেখা গেছে। বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ লেঃ কর্ণেল আব্দুল হানান, এইসি সাংবাদিকদের জানান, পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশি¬ষ্ট সকলের প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভাল ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে। আগামীতে আমরা এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাব।
বগুড়া জিলা স্কুল ঃ বগুড়া শহরের প্রানকেন্দ্র সাতমাথার অদুরে অবস্থিত শিক্ষা বিস্তারে অন্যতম এ প্রতিষ্ঠান এসএসসিতে গত বছরের মতো এবারও বোর্ডের সন্মিলিত মেধাতালিকায় ৬ষ্ঠ স্থান দখল করে সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছে। এছাড়া জেলার মধ্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। এবার এই বিদ্যালয় থেকে মোট ২৩৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২১২ জন। গ্রেড এ পেয়েছে ২৭ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ ১৭৭ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ১৩ জন। বানিজ্য বিভাগ থেকে ৪৯ জনের মধ্যে ৩৫ জন জিপিএ ৫ ও ১৪ জন গ্রেডএ পেয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষিক রমজান আলী আকন্দ জানান, গত বছরের মতো এবারও শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে।
আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ঃ বোর্ডে ৮ ম ও জেলার মধ্যে চতুর্থ স্থানে থাকা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এবার মোট ২০৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৬৬ জন। গ্রেড এ পেয়েছে ৩৯ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞানে ১০৪ জন অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০৩ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ১ জন। ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৭ জন অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫২ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ১৫ জন। মানবিক বিভাগে ৩৮ জন অংশ নিয়ে ১১ জন জিপিএ ৫ ও ২৩ জন গ্রেড এ পেয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।
এসওএস হারম্যান মেইনর স্কুল এন্ড কলেজ ঃ বোর্ডে ১৫ তম ও জেলার মধ্যে ৫ম স্থানে থাকা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৪৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪০ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ৫ জন।
বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ঃ বোর্ডে ১৬ তম ও জেলার মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৪৭ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১২১ জন। গ্রেড এ পেয়েছে ২৫ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ ৮৩ জন ও গ্রেড এ পেয়েছে ৮ জন। ব্যবসায় শিক্ষায় থেকে ৫৪ জনের মধ্যে ৩৭ জন জিপিএ ৫ ও ১৭ জন গ্রেডএ পেয়েছে। মানবিক থেকে ১ জনই অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে রাজশাহী বোর্ডে সেরা ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬ তম অবস্থান করে নেয়ায় আমরা আনন্দিত। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকা, অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এ ফলাফল অর্জন হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
পল্ল¬ী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ) ল্যাব. স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবার ১২৬ জন অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮৮ জন। এছাড়া বগুড়ার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্টান এবার ভালো ফলাফল করেছে। বোর্ডে ২০ তম স্থানে ও জেলার মধ্যে ৭তম স্থানে এ প্রতিষ্ঠান থেকেও শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে।
এছাড়া জেলার মধ্যে ভালো ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুল থেকে এবার ১৮৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০০ জন জিপিএ ৫ পেয়ে শতভাগ পাশ করেছে।
বগুড়ায় ভিওআইপি সরঞ্জাম রিভলবারসহ ২৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার ঃ আটক ৭
বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : বগুড়া শহরে পৃথক পৃথক অভিযানে র্যাব ১২ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জাম ও ২৩ রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি রিভলবারসহ সাতজনকে আটক করেছে। অটককৃত মালামালের মূল্য আনুমানিক প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। সোমবার ভোর থেকে র্যাব বগুড়া শহরের কাটনারপাড়ায় অবস্থিত সেবা ক্লিনিকের ছয় তলায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে দুই মহিলাসহ ছয়জন এবং সুত্রাপুর এলাকার অপর একটি বাড়ি থেকে ভিওআইপি সরঞ্জামসহ একজনকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে এ অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে আসছিল বলে র্যাব ১২ এর কমান্ডার সুমিত চৌধুরী জানান।ই স্কুল ও নওগাঁ গভঃ কেজি হাই স্কুল।
Discussion about this post