রাষ্ট্রপতি পদে প্রাথীর্র নাম ঘোষণার মধ্যেই নাটকীয়ভাবে ইউপিএ, আরো পরিস্কার করে বললে, কংগ্রেসের প্রার্থী প্রণব মুখার্জির প্রতি সমর্থন জানাতে শুরু করেছে দেশটির বড় বড় রাজনৈতিক দল। শুক্রবার বিকালে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে ইউপিএ সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী রাষ্ট্রপতি পদে বর্তমান অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির নাম প্রস্তাব করেন। এ সময় শরিক ডিএমকে, এনসিপি ছাড়াও অন্য দলগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শুধু ছিলেন না তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো প্রতিনিধি। ভোট অঙ্কের হিসাবে রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখার্জিও জয় নিশ্চিত। এই মুহুর্তে কংগ্রেস ও ইউপিএ জোটের ভোট রয়েছে ৪২ শতাংশ। আর এর সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির ৬, বহুজন সমাজবাদী পার্টির ৩.৫ এবং বামফ্রন্টের ৫ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে এনডিএর ভোট রয়েছে ৩২ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ৪ শতাংশ ভোট। ফলে ভোট অঙ্কের হিসাবে জয় নিশ্চিত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী প্রণব মুখার্জির। বহুজন সমাজবাদী পার্টির প্রধান মায়াবতী সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীকে সমর্থন করার ঘোষণা করেন। উত্তর প্রদেশের ক্ষমতাসীন দল সমাজবাদী পাটির তরফেও প্রণব মুখার্জিকে সমর্থন দেয়ার প্রতি ’সবুজ সংকেত’ দিয়েছে। শুধু তাই নয়, অনেকটা অবাক করে রাষ্ট্রপতি পদে ভারতের বামদলগুলো প্রণব মুখার্জিকে ভোট দেবে বলে আভাস দিচ্ছে সূত্রগুলো। রাষ্ট্রপতি পদের এই প্রথম বাঙালি কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলো দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এই দেশটিতে। আর বাঙালিদের তরফ থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রবল আপত্তি উঠল। বিশেষ করে, ক্ষমতাসীন জোট ইউপিএর অন্যতম বৃহত্তম শরিক তৃণমূল কংগ্রেস প্রণব মুখার্জিকে সমর্থন না দিয়ে, এ পি জে আব্দুল কালামকে রাষ্ট্রপতি করার ঘোষণায় অনড় থাকায় গত কয়েকদিনে ভারতের রাজনীতিকে বড় ধরণের নাটকীয় অবস্থার তৈরি হয়। শুধু তৃণমূল-ই নয়, প্রণবকে রাষ্ট্রপতি পদে মানতে নারাজ ছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিং যাদবও। কিন্তু ঘটনাচক্রে মুলায়ম সিং ও তার দল প্রণব মুখার্জিকে সমর্থন করতে যাচেছ বলেই দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। তবে তৃণমূল এখনো তাদের অনড় অবস্থানের কথাই জানিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে ইউপিএ’র বৈঠক রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসাবে প্রণব মুখার্জির নাম ঘোষণা করেন সোনিয়া গান্ধী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং বর্তমান অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি ছাড়াও শরিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ডাকাই হয়নি। অর্থমন্ত্রী হিসাবে আগামী ২৪ জুন ইস্তফা দিতে পারেন প্রণব মুখার্জি। ১৯ জুলাই ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ফলফল জানা যাবে ২২ জুলাই। এদিকে প্রণব মুখার্জি দিল্লিতে সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসাবে তার নাম ঘোষণা করায় দলের শীর্ষ নেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং শরিক দলের নেতাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। দেশের স্বার্থে যেকোনো দায়িত্ব তিনি নিতে প্রস্তুত বলেও জানান প্রণব মুখার্জি। ওদিকে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে মমতা ব্যানার্জি এখনও রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসাবে এপিজে আব্দুল কালামের নামে অনড় থাকার কথা জানান।
Discussion about this post