এফএনএস: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্র্টির (জাপা) নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। অনেক নাটকীয়তার পর জাতীয় পার্র্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে ছাড়াই শপথ নিলেন দলের নবনির্বাচিত সাংসদরা। এরশাদের স্ত্রী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্র্টিরা সদস্যরা জাতীয় সংসদের শপথ কক্ষে প্রবেশ করেন বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টায়। এরপর বেলা ১১টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে দশম সংসদের সদস্য হিসাবে শপথ নেন তারা।
সকাল ১০টায় শপথ অনুষ্ঠান শুরুর পর রেওয়াজ অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে আওয়ামী লীগের সদস্যদের আগে শপথ পড়ান স্পিকার। নবম সংসদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার দল আওয়ামী লীগের সাংস্যরা শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে শপথ নেন।
জাতীয় পার্র্টির সদস্যরা শপথ নেন তার এক ঘণ্টা পর। এর আগে রওশনের সভপতিত্বে বৈঠক করে জাতীয় পার্র্টির সংসদীয় দল। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েও আইনি মারপ্যাঁচে ভোটে জিতে যাওয়া এরশাদ বৃহস্পতিবার শপথ নিচ্ছেন কি না- তা নিশ্চিত করতে পারেননি দলের সদস্যরা। গত ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে র্যাবের পাহারায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন তিনি।
সংসদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বেলা ১১টায় জাতীয় পার্র্টির সদস্যদের শপথ পড়ানোর জন্য দলের পক্ষ থেকে স্পিকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এরশাদ বৃহস্পতিবার শপথ নিচ্ছেন কি না জানতে চাইলে জাতীয় পার্র্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমার সাথে যোগাযোগ নেই। তবে মনে হয় না আসবেন।
সাংসদদের শপথের পর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচনের পর চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে জানানো হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি আহ্বান জানালে নতুন সরকার শপথ নেবে। আগামী রোববার নতুন সরকার শপথ নিতে পারে।
৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নবনির্বাচিত সাংসদদের আজ শপথ গ্রহণ হবে বলে জানানো হয়।
দশম সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে আটটি আসনের ফলাফল স্থগিত আছে। বাকি ২৯২টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৩১, জাতীয় পার্টি ৩৩, ওয়ার্কার্স পার্টি ছয়, জাসদ পাঁচ, জাতীয় পার্টি-জেপি এক, তরীকত ফেডারেশন এক, বিএনএফ এক এবং স্বতন্ত্র ১৪ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে।
গতকাল বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ২৯০ জন সাংসদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। যশোর-১ ও যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন ও মনিরুল ইসলামের নাম গেজেটে প্রকাশ করা হয়নি। কমিশনের তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত দুজনের কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া গেলে তাঁদের নাম গেজেটে প্রকাশ করা হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল হবে বলে অন্যতম নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ জানিয়েছেন।
আটটি আসনের স্থগিত কেন্দ্রে ১৬ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে। আসনগুলো হলো দিনাজপুর-৪, কুড়িগ্রাম-৪, গাইবান্ধা-১, গাইবান্ধা-৩, গাইবান্ধা-৪, বগুড়া-৭, যশোর-৫ ও লক্ষ্মীপুর-১।
সংবিধান অনুযায়ী, একাধিক আসনে নির্বাচিত সাংসদদের শপথ গ্রহণের আগে যেকোনো একটি আসন রেখে অন্যগুলো ছেড়ে দিতে হয়। নির্বাচন কমিশন সে আসনগুলো শূন্য ঘোষণা করে। দশম সংসদে কেবল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬—এ দুটি আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি গোপালগঞ্জ-৩ আসন রেখে রংপুর-৬ আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন
Discussion about this post