প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্যকে ধরে রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও মেধাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদেরকে আরো দায়িত্বশীল ও মনোযোগী হতে হবে যাতে আমরা আরো ভালভাবে জনগণের সেবা করতে পারি। মনে রাখতে হবে দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হলে তার সুফল আমরা সকলেই ভোগ করবো।’ আজ সন্ধ্যায় ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের নবনির্বাচিত নির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। সরকারি কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের ঐকান্তিক সহযোগিতা ও কর্মতৎপরতায় জনগণ ইতোমধ্যেই তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুফল পেতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কল্যাণে সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তারা নির্বাহী দায়িত্ব পালন করেন। পুর্ণোদ্যমে কাজ করার জন্য বিশ্রাম ও বিনোদনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রে এ ক্লাব একটি নান্দনিক পীঠস্থান। তিনি ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, সৃজনশীল ও কল্যাণমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের নান্দনিকতা ও মানবিক বোধের আরো বিকাশ প্রত্যাশা করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ক্লাবের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু আলম মো. শহীদ খান এবং অভিষেক কমিটির আহ্বায়ক মো. শাহাজাহান মজুমদার বক্তব্য রাখেন। ক্লাবের সার্বিক উন্নয়নে তাঁর সরকারের সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কোন প্রস্তাব তাঁর কাছে প্রেরণ করা হলে তা তিনি অবশ্যই বিবেচনা করবেন। নবনির্বাচিত কার্যকরী কমিটি ক্লাবের ঐতিহ্যকে ধারণ করে নতুন ঐতিহ্য নির্মাণে কাজ করবেন এবং দায়িত্ব পালনে সততা, নিষ্ঠা ও সাফল্যের নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন সাফল্য ও চ্যালেঞ্জসমূহ উল্লেখ করে বলেন, জনগণ বিপুল আস্থা নিয়ে ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছেন। তাই জনগণের স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব আমাদের কাঁধে। গত তিন বছর আমরা অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এ গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মন্দা মোকাবেলা করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত, দুর্নীতির দমন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ইতোমধ্যে সরকার সাফল্য অর্জন করেছে। এছাড়া কৃষি, যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল খাতে সরকার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে কর্মকর্তাদের আরও মনোযোগী ও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, জনগণ আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছে যে কোন মূল্যেই তা সমুন্নত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এবার দায়িত্ব গ্রহণের পর আপনাদের বেতন ভাতা বাড়িয়েছি। চাকরির বয়সসীমা বাড়িয়েছি। আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে অফিসের কাজে নতুন গতি এসেছে। কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ই-গভর্নেন্স চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপ-সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া পদোন্নতি প্রদানের ব্যবস্থাকে নিয়মিতকরণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত তিন বছরে রাজস্বখাতে দুই লাখের বেশি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় প্রায় সাড়ে চার লাখ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে যেসব সরকারি কর্মকর্তা শহীদ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শেখ হাসিনা তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে রাজাকার ও দালাল ছাড়া দেশের প্রায় সকল মানুষ নানাভাবে নিগৃহীত ও নিপীড়িত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী অফিসার্স নতুন কমিটির সার্বিক সফলতা কামনা করেন এবং এই ক্লাবের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন। অনুষ্ঠানে শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন...
চট্টগ্রামে ক্যাব’র উদ্যোগে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সাথে অ্যাডভোকেসী সভা অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে ক্যাব’র উদ্যোগে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সাথে অ্যাডভোকেসী সভা অনুষ্ঠিত। ভোক্তাদের মাঝে শিক্ষা ও …