প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্তির প্রক্রিয়াধীন সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রো-রাটা (pro-rata) ভিত্তিতে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হবে সোমবার (২১ জুন)।
সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর নিকুঞ্জের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসইর) ট্রেনিং একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হবে।
ইলেক্ট্রনিক সাবক্রিপশন সিস্টেমের (ইএসএস) মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সোনালী লাইফের শেয়ার প্রো-রাটা ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানটির আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে ১০ হাজার টাকার আবেদনকারীরা সর্বোচ্চ ১৭টি শেয়ার পাবেন। ২০ হাজার টাকা আবেদনকারীরা পাবেন ৩৪টি শেয়ার, ৩০ ও ৪০ হাজার করে আবেদনকারীরা যথাক্রমে ৫১ ও ৬৮টি শেয়ার পাবেন। একইভাবে ৫০ হাজার টাকা আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৮৫টি শেয়ার।
রোববার (২০ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএসইর ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ শাখাওয়াত-ই-এলাহী।
সোনালী লাইফের তথ্যমতে, বিমা খাতের কোম্পানিটির আইপিওতে সাধারণ ও যোগ্য বিনিয়োগকারীদের এক কোটি ৯০ লাখ শেয়ারের জন্য ৭৩ কোটি ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ শেয়ারের জন্য আবেদন পড়েছে। যা বরাদ্দের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৪৫ গুণ বেশি।
জানা যায়, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত এক কোটি ১৪ লাখ শেয়ার পেতে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩৯ জন ৬২ কোটি ২৯ লাখ ১ হাজার শেয়ারের জন্য আবেদন পড়েছে। যা টাকার অংকে দাঁড়িয়েছে ৬২২ কোটি ৯০ লাখ ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৬৪ গুণের বেশি।
তিন ক্যাটাগরির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রবাসী ক্যাটাগরিতে ১৮ হাজার ৬০৮ জন বিনিয়োগকারী ৫ কোটি ৭৯ লাখ ৫ হাজার শেয়ারের জন্য আবেদন করেছেন। যা টাকার অংকে ৫৭ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ১০ হাজার টাকা করে আইপিওতে আবেদনকারীরা সোনালী লাইফের ২৩টি শেয়ার পাবেন। একই হারে পরবর্তী ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আবেদনকারীরা সর্বোচ্চ ১১৩টি শেয়ার পাবেন।
আইপিওতে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগী হচ্ছে দেশি বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে। এই ক্যাটাগরিতে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৫৬৫ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৪৭ কোটি ৫৫ লাখ ২৯ হাজার শেয়ারের জন্য আবেদন করেছেন, যা টাকার অংকে ৪৭৫কোটি ৫২ রাখ ৯০ হাজার টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দের চেয়ে ৬২ দশমিক ৫৭ গুণ বেশি।
ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যারা ১০ হাজার টাকা আইপিওতে আবেদন করেছেন, তারা সর্বোচ্চ ১৭টি শেয়ার পাবেন। ২০ হাজার টাকা আবেদনকারীরা পাবেন ৩৪টি শেয়ার, ৩০ ও ৪০ হাজার করে আবেদনকারীরা যথাক্রমে ৫১ ও ৬৮টি শেয়ার পাবেন। একইভাবে ৫০ হাজার টাকা আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৮৫টি শেয়ার।
ক্ষতিগ্রস্ত ৫৩ হাজার ৩৬৬ জন বিনিয়োগকারী ৮ কোটি ৯৪ লাখ ৬৭ হাজার শেয়ারের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন, যা টাকার অংকে ৮৯ কোটি ৪৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দের চেয়ে ৪৭ দশমিক ৯ গুণ বেশি। ফলে এই ক্যাটাগরিতে সর্বনিন্ম ১০ হাজার টাকার আবেদনকারী ৩৪টি করে শেয়ার পাবেন।
গত ৩০ মে সকাল ৯টা থেকে ৩ জুন বিকেল ৫টা পর্যন্ত সোনালী লাইফের আইপিওর সাবক্রিশনে ৭১১ প্রতিষ্ঠান যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে আবেদন গ্রহণ করে। তারা বরাদ্দকৃত ৭৬ লাখ শেয়ার ১০ কোটি ৭৫ লাখ ২৫ হাজার ৪০০টি শেয়ারের জন্য আবেদন করেছেন, যা টাকার অংকে ১০৭ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার টাকার শেয়ার। শতাংশের হিসাবে ১৪১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।
শর্ত অনুসারে, গত ১৯ মের মধ্যে যেসব বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ২০ হাজার টাকা ছিল, তারাই এই আইপিওতে আবেদন করতে পারবেন। এই বিনিয়োগকারীদের ন্যূনতম ১০ হাজার টাকার শেয়ারের জন্য আবেদন করতে হবে।
বিমা খাতের এই কোম্পানিকে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য গত ৯ ডিসেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৫২তম সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে এক কোটি ৯০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি সরকারি ট্রেজারি বন্ড, ফিক্সড ডিপোজিট, বাজারে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।
আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরে প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) ২৫ টাকা ৪৭ পয়সা (কোম্পানিটি কোনো সম্পদ পুনঃমূল্যায়ন করেনি) এবং লাইফ ইনস্যুরেন্স ফান্ডের পরিমাণ ৯৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং অগ্রণী ইকুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
Discussion about this post