সোনারগাঁওয়ের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ভিটিপাড়া গ্রামের কবির মালয়েশিয়ায় মৃত্যু মানবপচার কারী আবুবক্কর ছিদ্দিক (রবিন কে) সর্বচ্ছ্য শাস্তির দাবী পরিবারের
আল আমিন রানা ঃ বিশেষ সংবাদদাতা
বাবা কথাটির মাঝেই যেন লুকিয়ে রয়েছে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, নির্ভরশীলতা, আশ্রয়। প্রত্যেক সফল মানুষকে সফল হয়ে উঠতে যে মানুষটি অনেক পরিশ্রম, অনেক ত্যাগ, অনেক ভালোবাসা,অনেক স্নেহ-মমতা, ছায়া, দিকনির্দেশনা দিয়ে বড় করে তোলেন তিনিই বাবা। কিন্তু সে দিকনির্দেশনা কি আর দিবে দুই মাসের ছোট নাবালোক শিশুটিকে কবির? জম্মের ৪৫ দিনের মাথায় বাবাকে হারান বিজয় ইসলাম মানবপচার কারী ফাঁদে পড়ে জীবন দিতে হলো কবির কে। ভিটিপাড়া গ্রামের রাজনৈতিক ব্যক্তি একসময়ের যুব সমাজের নেতা আবুবক্কর ছিদ্দিক রবিন ওরফে বিল্লাল মুন্সির ছেলে-কয়েক কুড়ি বেকার যুবককে যুদ্ধ বিগ্রহের আগুনে ঢেলে দিয়ে এসেছে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য নৌ চোরা পথে। অসহায় যুবকগুলোর কোন হদিস নেই। স্বজনদের আহজারি আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। কেউ বলছে অনেকে মারা গিয়েছে নদী পথে শ্রমিক প্রেরণ কালে। সারাদেশের এমন আবুবক্কর ছিদ্দিক রবিনসহ অন্য অন্য দালালদের কোমরে রশি বেঁধে তাদের বিরুদ্ধে “ ছি-ছি” আন্দোলন শুরু হলে দৃর্নীতির একটা মূল তাগিদ সমাজ থেকে উৎপাটিত হবে । সরল বিশ্বাসে ভাগ্েযর উন্নয়নের আশায় সমুদ্রে ঝুকিপূর্ন যাত্রায় নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ভিটিপাড়া গ্রামের বিল্লাল মুন্সির ছেলে আবুবক্কর ছিদ্দিক (রবিন) গ্রামের খেটে খাওয়া সহজ সরল মানুষকে বুলি বালিদিয়ে সুমুদ্রে পথে পচার করে যাচ্ছেন বলে জানান এলাকাবাসি। তারি বুলি হয়েছেন ভিটিপাড়া গ্রামের নুরুু মিয়ার ছেলে কবির (৩২) পরিবারের সুত্রে জানা যায় চলতি বছর জানুয়ারী মাসে আবুবক্কর ছিদ্দিক (রবিন) কবির কে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া পাঠান। দীর্ঘ ২০ দিন পর আবুবক্কর ছিদ্দিক (রবিন) তার পরিবার কে টাকা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। যদি আড়াই লক্ষ টাকা দেন তাহলে কবিরকে আমরা মালয়েশিয়া তাদের আত্মীয়র নিকট পৌছে দিবো। টাকা না দেয়া প্রর্যন্ত তাকে আটকে রাখা হবে। সেই সুবাদে তার স্ত্রী লিপি আক্তার (২৪) আড়াই লক্ষ টাকা সুধের উপরে তুলে আবুবক্কর ছিদ্দিক কে দেন। কিন্তু আবুবক্কর ছিদ্দিক সহজ সরল খেটে খাওয়া মানুষ গুলোকে বারদী ইউনিয়নের মান্দের পাড়া গ্রামের মানবপচার কারী দালাল আল আমিনের হাতে তুলে দেন। আবুবক্কর ছিদ্দিক কে সহজ সরল মানুষ গুলো পুরো টাকা দিয়েছেন বলে ভোক্তবোগি পরিবার জানান। কিন্তু আবুবক্কর ছিদ্দিক কোনো টাকা আল আমিন ও আসল দালালের হাতে না দেয়ায় থাই জঙ্গলে সিন্ডিকেটের সদস্যরা কবিরের উপর নির্যাতন চালিয়েছেন দিনের পর দিন। আবুবক্কর ছিদ্দিক (রবিনকে) বিশ্বাস করে সমুদ্র যাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন কবির, কিন্তু সে যে এতো ভয়ংকর তা জানা ছিল না কবিরের। মৃত্যুর আগে আমাদের প্রতিনিধির সঙ্গে তার ফোনে কথা হয় থাই জঙ্গলের পাশে একটি ছোট ঘরে যে খানে ৫জন থাকার কথা সেখানে ২০জন মানুষকে একত্রে আহার বিহীন পাচঁটি মাস নিষ্ঠুর নির্মম ভাবে নির্যাতন করেছেন। বুকের মাঝে লাথি আর হাতে পায়ের খোছায় লাঠি দিয়ে আঘাত করতেন। কবিরের বড় ভাই শাহজাহান কুয়েত প্রবাসী তার সাথে কবিরের ফোনে আলাপ হতো অন্য একজনের মোবাইল মারফতে। কবির ভাই কে বলতেন “ভাই আমি বাচঁবো না আমাকে বাচাঁন” ওরা আমাকে প্রতিদিন মরদর করেন টাকার জন্য কিন্তু আমি তো সব টাকা আবুবক্কর কে দিয়ে দিয়েছি কিন্তু সে আসল দালালকে টাকা দেয়নি। আর আসল দালালকে টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে। কুয়েত প্রবাসী কবিরের বড় ভাই এলাকার শালিস কারিদের কাছে নালিশ করেও কোনো লাভ হয়নি। পাতি নেতা আবুবক্কর কে এলাকায় অনেকে ভয় পায় বলে জানান এলাকাবাসি। কবির মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে তার স্ত্রী অন্ত্বঃস্তা হয়ে পরেন। হয়তো স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর স্বামীকে খুশির সংবাদটা দিবেন। কিন্তু তার আগে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ এলো। এদিকে কবিরের বড় ভাই কবিরকে থাই জঙ্গলের নির্যাতন থেকে বাচানোর জন্যে এলাকার মুরোবীদের স্বনর্পণ হলে গ্রামবাসি আবুবক্করকে চাপ প্রয়োগ করলে সে আরো এক লক্ষ টাকা দাবী করেন। স্বামীর প্রাণ বাচাঁতে লিপি আক্তার ৮০ হাজার টাকা দিলে আবুবক্কর ছিদ্দিক কবির কে গত ১৫ই মে মালয়েশিয়া তার চাচাতো ভাই সামসু,সিরাজ,শাহআলম,আলমগীর এদের কাছে পৌছান। কিন্তু এতোক্ষণে কবিরের দেহের প্রতিটি অঙ্গ যেন মরে গেছে। তার শারীরিক অবস্থা এতোই খারাপ ছিলো যে তা আমাদের প্রতিবেদক আল আমিন রানার কাছে টেলি ফোনে মালয়েশিয়া থেকে রুবেল জানান। থাই জঙ্গলে থাকাকালিনই কবির বাবা হন। কিন্তু ভাগ্যের বড়ই নির্মম পরিহাস সন্তানের মুখটি আর দেখা হলো না,আর সন্তানটি ও তার জম্মদাতা পিতাকে দেখা হলো না। সব কিছু রেখে গত ২০ই মে মালয়েশিয়া “জুহুর বারো” এলাকায় তার চাচা তো ভাইদের বাসায় গুরুতরে অসুস্থ্য হয়ে পরলে গলা দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে হাসপাতালে নিয়ে যান। সে খানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। মারা যাওয়ার আগে কবির তার থাই জঙ্গলের নির্যাতনের একমাত্র দায়ী হিসাবে বিল্লাল মুন্সির বড় ছেলে আবুবক্কর ছিদ্দিক কে দায়ী করেন বলে জানান মালয়েশিয়া তার এক সাপ্ততা সঙ্গীদের কাছে। কবির বলতেন আবুবক্কর যদি সময় মতো আসল দালাল কে টাকা পরিশোধ করিতেন আজ আমার এ হাল হতো না। টাকার জন্য আমাকে কতো যে মার খেতে হয়েছে একমাত্র আল্লাহপাক জানেন। কবিরের মৃত্যুর সংবাদ তার চাচাতো ভাই সামসু,সিরাজ টেলি ফোনে মালয়েশিয়া থেকে জানান। স্থনীয় গ্রামবাসি মৃত্যুর সংবাদ শুনে ভিটিপাড়া গ্রামের ঘরে ঘরে স্বজনদের মাঝে কান্নার রোল পড়েছে। ছেলে, স্বামী, সন্তান, হারানোর বেদনায় পরিবার পরিজনের আহাজারীতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। উক্ত গ্রামে খেটে খাওয়া মেহনতি সহজ সরল একটি ছোট সাংসারে আহাজারিতে। স্বামী হারানোর বেদনায় মৃত্যু কবির এর বিবাহিতা গৃহবধু লিপি আক্তার (২৪) তার উড়না দিয়ে বাবরবার চোঁখ মুছে দুচোখের পানিতে বুক বিজিয়ে বাকরুদ্ধ কন্ঠে টেলি ফোনে সাংবাদিক আল আমিন রানার কাছে বলেন- ভিটিপাড়া গ্রামবাসি বিল্লালের ছেলে আবুবক্করয়ের মাধ্যমে আজ থেকে ৫মাস আগে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়ার উদ্দ্যেশেরওনা হন। নানা ভাবে লোভ দেখিয়ে আমার স্বামীকে মালয়েশিয়ার কোথায় এক জঙ্গলে নিয়ে ফেলে রাখেন আবুবক্কর। আমরা যে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি তা সে খেয়ে ফেলেছেন, আসল দালাল কে টাকা না দেয়ায় আমার স্বামীর উপর তারা নির্যাতন করে মেরে ফেলেছেন, আমি তার বিচার নয় আবুবক্করের ফাসিঁ চাই। আমার ২ মাসের শিশুটি আজ এতিম হলেন ওর কারনে। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কবিরের স্ত্রী ও তার নাবালোক শিশু বাদী হয়ে সোনাগাঁও থানায় আবুবক্কর ও আল আমিনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায় করেন। এদিকে একিই গ্রামের আশ্রব আলীর ছেলে –ইছাহাক আলী কে ও আবুবক্কর সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া পাঠান,কিন্ত বর্তমানে সে দীর্ঘ ৭মাস যাবৎ থাইলেন্ডয়ের কারাগারে অতি কষ্ঠের মাঝে দিন যাপন করছেন বলে তার পরিবার সুত্রে জানা যায়। এদিকে কবিরের লাশ ৪দিন মালয়েশিয়া জুহুর বারো এলাকায় একটি হাসপাতালে থাকার পর গত ৩০ মে বাংলাদেশে পাঠান তার চাচাতো ভাই সামসু,সিরাজ ও শাহআলম। লাশ বাংলাদেশে আনতে দেরলক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান তার চাচাতো ভাই সামসু ও সিরাজ। লাশ ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থেকে আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয় তার বড় ভাই মনির ও আবুল হোসেন, আবেদালী,গাজী,লাশ গ্রহন করেন। এদিকে কবিরের লাশবাহী গাড়ি ঢাকা যাত্রাবাড়ি হয়ে ভিটিপাড়া গ্রামে পৌছে সে খানে সৃষ্টি হয় এক স্বজন হারোনোর বেদনা বিদুর দৃশ্য কান্নার রুল বয়ে বেরাচ্ছে মালয়েশিয়া মানবপচার কারি ফাঁদে নিহত কবিরের লাশের পাশে স্বজনদের আহজারি। শনিবার বিকালে কবিরের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ভিটিপাড়া মাদ্রেসা প্রাঙ্গনে। জানাজার নামাজ পড়ান ভিটিপাগড়া মাদ্রেসার ইমাম। শনিবারদিন সন্ধ্যায় দড়িপাড়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। কবিরের স্ত্রী বলেন আমার স্বামী প্ররাই ৮লাখ টাকা ঋিন রেখে আমাকে আর আমার সন্তানকে এতিম করে চলে গেছেন এর জন্য একমাত্র দায়ী বিল্লালের পোলা আবুবক্কর। মালয়েশিয়ায় মানবপারকারী সিন্ডিকেটের বিচারের দাবী পরিবার ও গ্রামবাসি দ্রুত এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানান। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে তার স্ত্রী লিপি আক্তার ও স্বজনরা। প্রতিবেদনটি লেখার জন্য গ্রামের সুশিল সামাজের ব্যাক্তিদের সঙ্গে ও নিহতদের পরিবারের সাথে ফোনে কথা হয় আমাদের কুয়েত প্রতিনিধি সাংবাদিক আল আমিন রানার।
Discussion about this post