২ এপ্রিলের মধ্যে সংবাদপত্র শিল্পে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করা না হলে ৩ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশে সাংবাদিকেরা কলম বিরতি পালন করবে। ওই দিন বেলা ১১টায় প্রেস ক্লাব থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত অবস’ান কর্মসূচি পালিত হবে। অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবিতে সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত গতকালের সমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়েজ বোর্ড ঘোষণায় গড়িমসি করায় বক্তারা তথ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ, আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ডিইউজের সভাপতি আব্দুস শহিদ, ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, আলমগীর হোসেন খান, বদিউল আলম তালুকদার, কামাল উদ্দিন, ডিইউজের সহসভাপতি খায়রুল বাশার, তরুণ তপন চক্রবর্তী, খায়রুল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, জাহাঙ্গির আলম প্রধান, গোলাম সরওয়ার আজাদ, আবুল হোসেন খান মোহন, গোলাম জিলানী, সোহেল হায়দার চৌধুরী, আবুল কালাম মানিক, বজলুর রহমান এবং আবু সালেহ আকন প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ।
সভাপতির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, এ কুলাঙ্গার তথ্যমন্ত্রীকে গদি ছাড়তে হবে। ২ এপ্রিলের মধ্যে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা না হলে ৩ এপ্রিল থেকে তথ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের আন্দোলন শুরু হবে।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, তথ্যমন্ত্রী ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভঙ্গ করেছেন। সাংবাদিকদের অপমান করেছেন ও অবজ্ঞা করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের রাস্তায় ঠেলে দিয়েছেন। তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আপনি সাংবাদিক-কর্মচারী ও সংবাদপত্রসেবীদের সাথে বেঈমানী করেছেন। তাই আপনাকে প্রেস ক্লাবে অবাঞ্ছিত করছি। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্যমন্ত্রীর সহযোগী সদস্য পদ বাতিলের দাবি জানান। তিনি বলেন, যত দিনে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা না হবে তত দিন সাংবাদিকেরা রাজপথ ছেড়ে যাবে না।
শওকত মাহমুদ বলেন, আমরা রুটিরুজির জন্য আজ রাজপথে নেমেছি। তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি সাংবাদিকদের লাল রক্তের সাথে থাকবেন, না লালপানির সাথে থাকবেন সে সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, এ তথ্যমন্ত্রীর সময়ে সাগর-রুনিসহ দেশে ১৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অসংখ্য সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিন’ তথ্যমন্ত্রী কোনোই ব্যবস’া গ্রহণ করেননি।
আব্দুল জলিল ভূঁইয়া তথ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি কাদের সাথে খেলছেন তা বুঝতে পারছেন না। সাংবাদিকেরা চাইলে আপনার ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে। ব্যারিস্টার মইনুলের চেয়েও আপনাকে বেশি অপমানিত হয়ে পদ ছাড়তে হবে।
ওমর ফারুক বলেন, তথ্যমন্ত্রীকে মনে রাখতে হবে মইনুল হোসেনের উপদেষ্টাগিরি কিভাবে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার আগে সাংবাদিকেরা রাজপথ ছাড়বে না।
মুহাম্মদ বাকের হোসাইন বলেন, এ তথ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন। এ কারণেই সাংবাদিকেরা আজ রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক সাগর-রুনি খুন হয়েছেন, অথচ তথ্যমন্ত্রী দেখতেও যাননি।
সভা শেষে সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারীরা এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি কদমফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে প্রেস ক্লাবের এসে শেষ হয়।
Discussion about this post