কুয়েতের কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের সপ্তম অধ্যায়ের অধীনে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং অর্থ পাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং সত্তা বা সংস্থার “জাতীয় তালিকা” প্রকাশ করেছে। ২৮ জুলাই সোমবার কুয়েতের জাতীয় দৈনিক আরব টাইমস এবং আল রাই পত্রিকা সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেশটিতে থেকে সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং মানি লন্ডারিংয়ের সাথে জড়িত থাকায় বিভিন্ন দেশের ১১৮ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকায় এখন ১১৮ জন ব্যক্তি এবং ১৩টি সত্তা বা সংস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যাদের সন্ত্রাসী অর্থায়ন নেটওয়ার্ক বা অবৈধ আর্থিক কার্যকলাপের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারো নাম প্রকাশ না করলেও কোন দেশের কতজন নাগরিক জড়িত সেটা প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমে। আপডেট অনুসারে, ১১৮ জন ব্যক্তি বিভিন্ন জাতীয়তার মধ্যে ১৭ জন সিরিয়ান, ১৬ জন সোমালি, ১৩ জন ইয়েমেনি, ৯ জন লেবানিজ, ৪ জন অস্ট্রেলিয়ান, ৪ জন তিউনিসিয়ান, ৪ জন বাহরাইনি, ৩ জন সৌদি, ৩ জন পাকিস্তানি, ৩ জন মিশরীয়, ৩ জন কুয়েতি, ২ জন উগান্ডা, ২ জন ইরিত্রিয়ান, ২ জন ইরানি, ২ জন কাতারী, ১ জন ইউক্রেনীয়, তালিকায় আরো ১১ জন প্রবাসী, ৯ জন রাষ্ট্রহীন বেদুইন এবং ১১ জন অনির্দিষ্ট জাতীয়তার ব্যক্তির নামও রয়েছে। এছাড়া ১৩টি নামধারী সংগঠন বিভিন্ন অঞ্চল এবং সেক্টরে বিস্তৃত, যদিও বিবৃতিতে নির্দিষ্ট নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সন্ত্রাসবাদকে সহায়তাকারী আর্থিক নেটওয়ার্কগুলির সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঠেকাতে কুয়েতের চলমান উদ্যোগ মধ্যপ্রাচ্যে এ ধরনের আর্থিক নেটওয়ার্কগুলোর বিরুদ্ধে জোরালো আঞ্চলিক দমন অভিযানকেই প্রতিফলিত করে। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সন্ত্রাসবিরোধী বৈশ্বিক প্রটোকল অনুযায়ী স্বচ্ছতা বজায় রাখা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের মতো গুরুতর অপরাধ দমনে কুয়েত সম্প্রতি যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তা মধ্যপ্রাচ্যে এই ধরনের অবৈধ আর্থিক নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক দমন প্রচেষ্টারই একটি অংশ। দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই অপরাধচক্র শনাক্ত ও প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। কুয়েতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবিরোধী বৈশ্বিক প্রটোকল অনুসরণে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে তথ্যবিনিময়, আর্থিক লেনদেনের ওপর নজরদারি এবং ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাকাউন্টের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তারা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সরকার বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করছে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে। কুয়েতের এই প্রচেষ্টা শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, বরং গোটা অঞ্চলে সন্ত্রাসী তহবিল সংগ্রহের পথ বন্ধ করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Discussion about this post