
গ্রীষ্মকালে, কুয়েতে সূর্যের তীব্র তাপের কারণে খোলা আকাশের নীচে বাইরে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কুয়েত সরকার দেশের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে, ১ জুন থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত গ্রীষ্মকালে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা আকাশের নীচে কাজ করা নিষিদ্ধ করে। তীব্র তাপের কারণে, বিভিন্ন গাছপালা, ফুলের বাগান থেকে শুরু করে কৃত্রিম হ্রদ শুকিয়ে যায় এবং মরুভূমিতে পরিণত হয়। ফলস্বরূপ, দেশটির মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত ইকোপার্কগুলি সেই সময় পর্যটক শূন্য হয়ে যায়। কিন্তু শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে, এই পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। শীত মৌসুমে কুয়েতের মরুভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ইকোপার্ক সহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। শীত মৌসুমে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে, প্রকৃতির সৌন্দর্যের পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে কৃত্রিমভাবে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়। কায়ারিং নৌকা, ঘোড়া ও উটে চড়া, বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি দেখার সুযোগ এবং কৃত্রিম হ্রদের ধারে আড্ডার ব্যবস্থা করা হয়। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি এই পার্ক এবং খামারগুলিতে কাজ করেন। আবদালি শহরের একটি পার্কের দায়িত্বে থাকা সুলেমান নামে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, “গ্রীষ্মকালে পার্কটি বন্ধ থাকে। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে বাইরে কিছুই করা যায় না। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঠান্ডা থাকে, তাই এই সময় বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক বেড়াতে আসেন, যার মধ্যে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিও আছেন।” সোমালি বংশোদ্ভূত জেয়াদ ফার্ম সুপারভাইজার আদম বলেন, “এখানে অনেক রাইড আছে, অনেক প্রাণী আছে। বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার খুব ভিড় থাকে, এবং ছুটির দিনে পর্যটকদের ভিড় থাকে বেশি, অনেকে এখানে আসেন এবং বিভিন্ন রাইড চড়ে উপভোগ করেন। পার্কে আসা পর্যটকদের সাথে কথা বললে তারা জানান কুয়েতে মরুভূমির মাঝখানে এমন পার্ক আছে তা যদি তারা নিজের চোখে না দেখতেন তবে তারা বিশ্বাসই করতেন না। যখনই তারা প্রবাসে ব্যস্ত জীবন থেকে বিরতি পান, তারা নতুন পর্যটন কেন্দ্রের সন্ধানে ছুটে বেড়ান। কুয়েতে শীতকাল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত স্থায়ী হয়। শীতকালে, দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি, প্রবাসীরাও এই কেন্দ্রগুলির ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য উপভোগ করেন। বর্তমানে, কুয়েত সকল দেশের জন্য ভিজিট ভিসা খুলে দিয়েছে। এখন অনেক প্রবাসী তাদের পরিবারের সদস্যদের কুয়েতে নিয়ে যেতে পারবেন। ফলস্বরূপ, সংশ্লিষ্টরা বিশ্বাস করেন যে কুয়েতের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের অভূতপূর্ব আগমন ঘটবে। বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব কুয়েতের সভাপতি এবং সিনিয়র সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার সুমন বিশ্বাস করেন যে কুয়েত সরকার কর্তৃক ভিজিট ভিসা খোলার ফলে দেশের পর্যটন শিল্পে নতুন গতি যোগাবে। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা সহজেই কুয়েতে ভ্রমণ করতে পারবেন। এর ফলে কুয়েতের ঐতিহাসিক স্থান এবং জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। দেশের হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল এবং অন্যান্য পরিষেবা খাতে নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি উভয়ই লাভবান হবে। এইভাবে ভিজিট ভিসা চালু করা কেবল প্রবাসীদের পরিবারের জন্যই সুখবর নয়, বরং কুয়েতকে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করবে।
লেখক: মঈন উদ্দিন সরকার সুমন
সভাপতি বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েত
+96599297830









Discussion about this post